এসিল্যান্ড নিরুপম মজুমদার ও ওসি মোহাম্মদ আবুল বাসারের তাৎক্ষণিক পদক্ষেপে প্রশংসায় ভাসছে শাহরাস্তি
একটি রাস্তা—যা দিয়ে কয়েকটি পরিবারের প্রতিদিনের যাতায়াত, স্কুলে যাওয়া শিশু থেকে শুরু করে রোগী বহনের একমাত্র ভরসা—সেই রাস্তা যদি পারিবারিক বিরোধের কারণে বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে এর পরিণতি কতটা ভয়াবহ হতে পারে, তা সম্প্রতি চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার সূচীপাড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের রাগৈ গ্রামবাসী হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছেন।
গত কয়েকদিন ধরে রাগৈ গ্রামের যুগি বাড়ির গুরুত্বপূর্ণ একটি চলাচলের পথ পারিবারিক বিরোধের জের ধরে বেড়া দিয়ে বন্ধ করে রাখা হয়। এতে নারী, শিশু, শিক্ষার্থী ও বৃদ্ধসহ সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগের শিকার হন। দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার হওয়া এই জনপথটি আটকে দেওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে পুরো এলাকা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয় প্রতিবাদ, স্থানীয় প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়।
ঘটনার গুরুত্ব অনুধাবন করে ১ জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ দুপুর ১২টা নাগাদ ঘটনাস্থলে পৌঁছান উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) নিরুপম মজুমদার এবং শাহরাস্তি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আবুল বাসার। তাঁদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন রাগৈ ইউনিয়নের উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
তাঁরা ভুক্তভোগী এলাকাবাসীর বক্তব্য শোনেন, ঘটনাস্থল সরেজমিনে পরিদর্শন করেন এবং অবিলম্বে বেড়া অপসারণ করে পথটি খুলে দেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) নিরুপম মজুমদার বলেন:
“কোনো ব্যক্তি যদি সরকারি বা জনসাধারণের ব্যবহৃত রাস্তা বন্ধ করে দেয়, তা সরাসরি আইনের লঙ্ঘন। এধরনের কর্মকাণ্ড ভবিষ্যতে হলে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। জনগণের চলাচলের অধিকার কারও দয়ার দান নয়, এটি সাংবিধানিক অধিকার।”
ওসি মোহাম্মদ আবুল বাসার বলেন:
“এটি শুধুমাত্র পারিবারিক ইস্যু নয়, এটি জনস্বার্থের প্রশ্ন। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সাধারণ মানুষের পাশে আছে এবং থাকবে।”
এই ঘটনাটি সামনে আসার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। অনেকেই বলছেন, এটি প্রশাসনের আন্তরিকতা ও দায়িত্ববোধের অনন্য দৃষ্টান্ত। সাধারণত এ ধরনের স্থানীয় সমস্যা দীর্ঘসময় ঝুলে থাকে, কিন্তু রাগৈ গ্রামের ঘটনাটি ব্যতিক্রম — কারণ এতে প্রশাসনিক গতি, মানবিকতা ও আইনের প্রয়োগ একসঙ্গে মিলেছে।
রাগৈ গ্রামের ঘটনাটি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় — কোনো বৈধ অধিকার ক্ষুন্ন হলে জনগণ প্রতিবাদ করবে, এবং দায়িত্বশীল প্রশাসন পাশে দাঁড়ালে সমাধান সম্ভব। নিরুপম মজুমদার ও মোহাম্মদ আবুল বাসার এই ঘটনার মধ্য দিয়ে শুধু একটি রাস্তা নয়, জনগণের আস্থা ও অধিকার রক্ষার পথও উন্মুক্ত করে দিয়েছেন।