চাঁদপুরের শাহরাস্তিতে “নিয়মিত ভূমি উন্নয়ন কর প্রদান করি, নিজের জমি সুরক্ষিত রাখি” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী ভূমি উন্নয়ন মেলা। রোববার (২৫ মে) সকালে উপজেলা পরিষদ চত্বরে বর্ণাঢ্য আয়োজনে মেলার উদ্বোধন ঘোষণা করা হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিগার সুলতানা এবং সভাপতিত্ব করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) নিরুপম মজুমদার। সঞ্চালনায় ছিলেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আলী আশরাফ।
মেলার উদ্বোধনের পূর্বে এক বর্ণাঢ্য র্যালি উপজেলার নির্বাহী কার্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হয়ে পৌর শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপজেলা পরিষদ চত্বরে এসে শেষ হয়। র্যালির আগে বেলুন উড়িয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে মেলার শুভ সূচনা করা হয়। র্যালিতে রাজনৈতিক, সামাজিক, প্রশাসনিক ব্যক্তিবর্গসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ইউএনও নিগার সুলতানা বলেন, “সরকার ভূমি ব্যবস্থাপনাকে আধুনিক, জনবান্ধব ও প্রযুক্তিনির্ভর করতে ধারাবাহিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ভূমি অফিস এখন আর আগের মতো নয়। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সেবা সহজলভ্য করা হচ্ছে। জনগণের দোরগোড়ায় ভূমি সেবা পৌঁছে দিতে এই ভূমি উন্নয়ন মেলার আয়োজন করা হয়েছে। এতে মানুষ সচেতন হচ্ছে, জমির স্বত্ব নিয়ে ভোগান্তি কমছে, দুর্নীতি হ্রাস পাচ্ছে। সঠিক সময়ে ভূমি কর প্রদান করলে নিজেদের সম্পত্তি যেমন সুরক্ষিত থাকে, তেমনি সরকারের রাজস্ব আয়ও বৃদ্ধি পায়।”
তিনি আরও বলেন, “ভূমি মেলার মাধ্যমে জনগণের সরাসরি অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয়েছে। সেবা পেতে মানুষকে আর ভোগান্তিতে পড়তে হবে না। যে কেউ এখন ঘরে বসেই ভূমি সংক্রান্ত সেবা নিতে পারছেন। এই মেলার মাধ্যমে জনগণ আরও সচেতন হবেন বলে আমি বিশ্বাস করি।”
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আয়শা আক্তার, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আকলিমা জাহান। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শাহরাস্তি উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর মোস্তফা কামাল, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক আলী আজগর মিয়াজি এবং পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব ফারুক হোসেন মিয়াজি।
জানা গেছে, দেশের অন্যান্য উপজেলার মতো শাহরাস্তিতেও ২৫ মে থেকে ২৭ মে পর্যন্ত চলবে এই ভূমি উন্নয়ন মেলা। মেলায় নাগরিকরা ভূমি সংক্রান্ত বিভিন্ন ডিজিটাল সেবা যেমন অনলাইন ভূমি কর প্রদান, নামজারি, খতিয়ান যাচাই ও ভূমি বিরোধ সংক্রান্ত পরামর্শ ইত্যাদি গ্রহণ করতে পারছেন।
স্থানীয় নাগরিকরা মনে করছেন, ডিজিটাল সেবার প্রসার ও জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে ভূমি উন্নয়ন মেলার আয়োজন নিঃসন্দেহে সময়োপযোগী ও প্রশংসনীয় উদ্যোগ।