আনোয়ার হোসেন খোকন—বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক এবং একজন পরিচ্ছন্ন, প্রজ্ঞাবান ও পরিশ্রমী সংগঠক। ছাত্রজীবন থেকেই তাঁর রাজনীতির শুরু এবং আজ তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিএনপির নেতৃত্বে গুরুত্বপূর্ণ এক নাম। তাঁর রাজনীতির যাত্রা শুরু হয় ১৯৮০ সালের জানুয়ারিতে, যখন সিলেট জেলার বালাগঞ্জ উপজেলার এম সি এন কে হাই স্কুল পরিদর্শনে আসেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। সেই সময় স্কুল শিক্ষার্থী হিসেবে শহীদ জিয়ার সান্নিধ্যে এসে অনুপ্রাণিত হন খোকন, যেটি তার রাজনীতির বীজ রোপণের সূচনা করে।
পরবর্তী সময়ে তিনি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের নিউ হোস্টেল ছাত্রাবাসে ছাত্রদলের সহ-প্রচার সম্পাদক নির্বাচিত হন। এরপর শাহরাস্তি উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নির্বাচিত হন। এ সময় তাঁর সহযাত্রীরা ছিলেন বর্তমান বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ, নিখোঁজ নেতা ইলিয়াস আলী, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, হাবিবুন নবী সোহেল, নাজিমউদ্দিন আলম এবং ফজলুল হক মিলনের মতো তুখোড় নেতারা। একত্রে তারা ছাত্রদলকে সংগঠিত করে জাতীয় রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছিলেন।
ছাত্রজীবনে শুধু রাজনৈতিক দায়িত্বই নয়, তিনি শাহরাস্তি থানা ছাত্র কল্যাণ সমিতির সভাপতির দায়িত্বও পালন করেন। এরপর তিনি জেলা ছাত্র কল্যাণ সমিতির সভাপতির দায়িত্বেও ছিলেন, যা তাঁর সাংগঠনিক দক্ষতার প্রমাণ দেয়। পরবর্তীতে যুক্তরাজ্যে গিয়ে সেখানে রাজনৈতিক কার্যক্রমে সক্রিয় হন। যুক্তরাজ্যে অবস্থানকালে তিনি প্রথমে ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য, পরে যুক্তরাজ্য পেশাজীবী দলের আহ্বায়ক নির্বাচিত হন। এরপর যুক্তরাজ্য বিএনপির আহ্বায়ক কমিটিতে সদস্য হিসেবে এবং পরবর্তীতে সহ-সভাপতির দায়িত্বে নির্বাচিত হন। তাঁর পরিশ্রম, নেতৃত্বগুণ ও কর্মদক্ষতার কারণে তিনি পরপর দুটি মেয়াদে সহ-সভাপতির দায়িত্বে বহাল থাকেন।
২০১৬ সালে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-আন্তর্জাতিক সম্পাদক হিসেবে কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে প্রত্যাবর্তন ঘটে তাঁর। সেখানেও তাঁর অসাধারণ ভূমিকার ফলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তাঁকে উত্তর আমেরিকা, দক্ষিণ আমেরিকা ও আফ্রিকা মহাদেশের সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব দেন। তাঁর দায়িত্ব পালনের নিষ্ঠা ও দক্ষতার স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২৩ সালে তাঁকে আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়। একইসঙ্গে ইউরোপ, উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা, আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া মহাদেশসহ বহির্বিশ্বে (মধ্যপ্রাচ্য ব্যতীত) বিএনপির সাংগঠনিক দায়িত্বও তাঁর কাঁধে অর্পিত হয়।
আনোয়ার হোসেন খোকন একজন কর্মনিষ্ঠ, আত্মপ্রত্যয়ী এবং সৎ রাজনীতিক। তাঁর রাজনৈতিক জীবনের প্রতিটি ধাপে রয়েছে সংগ্রাম, রয়েছে সাফল্য, রয়েছে নেতৃত্বের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তাঁর “ক্লিন ইমেজ” তাঁকে বিএনপির আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক পরিমণ্ডলে একজন আস্থাভাজন ও নির্ভরযোগ্য নেতায় পরিণত করেছে। ভবিষ্যতের বিএনপিতে তাঁর নেতৃত্ব আরও ব্যাপক ভূমিকা রাখবে বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা। দলের প্রতি তাঁর নিষ্ঠা, সংগঠনের প্রতি তাঁর ভালোবাসা এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দলের ভাবমূর্তি প্রতিষ্ঠায় তাঁর অবদান আজও সমাদৃত ও স্মরণীয়।