ঢাকা , রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫

“ক্রিকেট নয়, স্বপ্নের মঞ্চ: আজ মাঠে গড়াচ্ছে শাহরাস্তি প্রিমিয়ার লীগ সিজন-২ এর ফাইনাল”

আজ চাঁদপুরের শাহরাস্তি যেন এক ক্রিকেট উৎসবের জনপদে পরিণত হয়েছে। শাহরাস্তি প্রিমিয়ার লীগ (এসপিএল) সিজন ২-এর ফাইনাল ম্যাচকে ঘিরে উত্তেজনার পারদ তুঙ্গে। তবে এবারের আয়োজন শুধুই একটি ফাইনাল ম্যাচ নয়—এ যেন একটা চলমান স্বপ্নের মঞ্চায়ন। স্থানীয় তরুণদের স্বপ্ন, উদ্যোক্তাদের সাহসিকতা এবং গ্রামীণ ক্রিকেট সংস্কৃতির এক মোহময়ী প্রকাশ।

শিরোপা লড়াইয়ে আজ মুখোমুখি হচ্ছে আলকরা স্পোর্টস ইউনিটি, চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) বনাম ভিক্টোরি সুপার হিরোজ, হাজীগঞ্জ (চাঁদপুর)। দুই দলের খেলোয়াড়দের প্রস্তুতি এবং প্রত্যাশা নিয়ে মাঠের চারপাশে তৈরি হয়েছে এক উৎসবমুখর পরিবেশ। আয়োজকরা জানান, এবারের ফাইনাল শুধুই ক্রিকেট ম্যাচ নয়—এটা হলো হাজারো তরুণের আত্মবিশ্বাসের প্রকাশ।

এই টুর্নামেন্টের সবচেয়ে ব্যতিক্রমী দিক ছিল এর আয়োজনের পেছনের দর্শন। শাহরাস্তির একদল তরুণ সংগঠক যখন সিদ্ধান্ত নেন যে তারা শুধু খেলার আয়োজন নয়, বরং একটি সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলবেন—তখনই এসপিএল হয়ে ওঠে শুধু একটি টুর্নামেন্ট নয়, বরং তরুণ প্রজন্মকে ইতিবাচক পথে টেনে আনার এক মাধ্যম। শাহরাস্তির মাঠে আজ যে গ্যালারি দেখা যাচ্ছে, তা কেবল দর্শকের ভিড় নয়, বরং এলাকার মানুষদের মনের মিলনস্থল।

শাহরাস্তি ক্রিকেট একাডেমীর প্রতিষ্টাতা ও আয়োজক সাদ্দাম হোসেন মিঠু বলেন, “আমাদের লক্ষ্য ছিল শুধু একটি টুর্নামেন্ট নয়—একটি স্বপ্ন তৈরি করা। যেখানে শাহরাস্তির তরুণরা দেখবে, তারা পিছিয়ে নেই। মাদক, জুয়া নয়—খেলাধুলাই হতে পারে জীবনের পরিবর্তন। আমরা প্রমাণ করেছি গ্রামের মাটিতেও আন্তর্জাতিক মানের আয়োজন সম্ভব, যদি ইচ্ছে থাকে।”

টুর্নামেন্টের আরেকটি অনন্য দিক হলো এর সম্প্রচার ব্যবস্থা। স্থানীয় প্রযুক্তিবিদ ও মিডিয়া কর্মীরা মিলে গড়ে তুলেছেন এক প্রফেশনাল মানের সম্প্রচার কাঠামো। এমনকি শহরের বাইরের পেশাদার ধারাভাষ্যকার ছাড়াই স্থানীয়দের মাধ্যমে হয়েছে প্রাণবন্ত ধারাভাষ্য, যা হাজারো দর্শককে আকৃষ্ট করেছে।

সবশেষে, শাহরাস্তি প্রিমিয়ার লীগ যেন কেবল ট্রফি জয়ের প্রতিযোগিতা নয়—এ এক সামাজিক বিপ্লব। মাঠে গড়ানো প্রতিটি বল, প্রতিটি ছক্কা যেন বলে দিচ্ছে, গ্রামের ছেলেরা পিছিয়ে নেই—সুযোগ পেলেই তারাও আলো ছড়াতে জানে। আজকের ফাইনাল ম্যাচ কেবল একজন জয়ী দলকে নয়, বরং একটি জয়ী মানসিকতাকে উদযাপন করছে—যার কেন্দ্রবিন্দু শাহরাস্তি, আর প্রতিচ্ছবি পুরো বাংলাদেশ।

Facebook Comments Box
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

গ্রাম থেকে গ্লোবাল ভাবনায় “পরানপুর মানব উন্নয়ন সংস্থা” — শিক্ষায় আলোকবর্তিকা জ্বালাতে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ

“ক্রিকেট নয়, স্বপ্নের মঞ্চ: আজ মাঠে গড়াচ্ছে শাহরাস্তি প্রিমিয়ার লীগ সিজন-২ এর ফাইনাল”

আপডেট সময় : ০৩:১৭:২১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৫ এপ্রিল ২০২৫

আজ চাঁদপুরের শাহরাস্তি যেন এক ক্রিকেট উৎসবের জনপদে পরিণত হয়েছে। শাহরাস্তি প্রিমিয়ার লীগ (এসপিএল) সিজন ২-এর ফাইনাল ম্যাচকে ঘিরে উত্তেজনার পারদ তুঙ্গে। তবে এবারের আয়োজন শুধুই একটি ফাইনাল ম্যাচ নয়—এ যেন একটা চলমান স্বপ্নের মঞ্চায়ন। স্থানীয় তরুণদের স্বপ্ন, উদ্যোক্তাদের সাহসিকতা এবং গ্রামীণ ক্রিকেট সংস্কৃতির এক মোহময়ী প্রকাশ।

শিরোপা লড়াইয়ে আজ মুখোমুখি হচ্ছে আলকরা স্পোর্টস ইউনিটি, চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) বনাম ভিক্টোরি সুপার হিরোজ, হাজীগঞ্জ (চাঁদপুর)। দুই দলের খেলোয়াড়দের প্রস্তুতি এবং প্রত্যাশা নিয়ে মাঠের চারপাশে তৈরি হয়েছে এক উৎসবমুখর পরিবেশ। আয়োজকরা জানান, এবারের ফাইনাল শুধুই ক্রিকেট ম্যাচ নয়—এটা হলো হাজারো তরুণের আত্মবিশ্বাসের প্রকাশ।

এই টুর্নামেন্টের সবচেয়ে ব্যতিক্রমী দিক ছিল এর আয়োজনের পেছনের দর্শন। শাহরাস্তির একদল তরুণ সংগঠক যখন সিদ্ধান্ত নেন যে তারা শুধু খেলার আয়োজন নয়, বরং একটি সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলবেন—তখনই এসপিএল হয়ে ওঠে শুধু একটি টুর্নামেন্ট নয়, বরং তরুণ প্রজন্মকে ইতিবাচক পথে টেনে আনার এক মাধ্যম। শাহরাস্তির মাঠে আজ যে গ্যালারি দেখা যাচ্ছে, তা কেবল দর্শকের ভিড় নয়, বরং এলাকার মানুষদের মনের মিলনস্থল।

শাহরাস্তি ক্রিকেট একাডেমীর প্রতিষ্টাতা ও আয়োজক সাদ্দাম হোসেন মিঠু বলেন, “আমাদের লক্ষ্য ছিল শুধু একটি টুর্নামেন্ট নয়—একটি স্বপ্ন তৈরি করা। যেখানে শাহরাস্তির তরুণরা দেখবে, তারা পিছিয়ে নেই। মাদক, জুয়া নয়—খেলাধুলাই হতে পারে জীবনের পরিবর্তন। আমরা প্রমাণ করেছি গ্রামের মাটিতেও আন্তর্জাতিক মানের আয়োজন সম্ভব, যদি ইচ্ছে থাকে।”

টুর্নামেন্টের আরেকটি অনন্য দিক হলো এর সম্প্রচার ব্যবস্থা। স্থানীয় প্রযুক্তিবিদ ও মিডিয়া কর্মীরা মিলে গড়ে তুলেছেন এক প্রফেশনাল মানের সম্প্রচার কাঠামো। এমনকি শহরের বাইরের পেশাদার ধারাভাষ্যকার ছাড়াই স্থানীয়দের মাধ্যমে হয়েছে প্রাণবন্ত ধারাভাষ্য, যা হাজারো দর্শককে আকৃষ্ট করেছে।

সবশেষে, শাহরাস্তি প্রিমিয়ার লীগ যেন কেবল ট্রফি জয়ের প্রতিযোগিতা নয়—এ এক সামাজিক বিপ্লব। মাঠে গড়ানো প্রতিটি বল, প্রতিটি ছক্কা যেন বলে দিচ্ছে, গ্রামের ছেলেরা পিছিয়ে নেই—সুযোগ পেলেই তারাও আলো ছড়াতে জানে। আজকের ফাইনাল ম্যাচ কেবল একজন জয়ী দলকে নয়, বরং একটি জয়ী মানসিকতাকে উদযাপন করছে—যার কেন্দ্রবিন্দু শাহরাস্তি, আর প্রতিচ্ছবি পুরো বাংলাদেশ।

Facebook Comments Box