
বাংলাদেশে ধর্ষণের ঘটনা দিন দিন বাড়ছে, কিন্তু বিচার প্রক্রিয়া ও আইনের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ধর্ষণের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললেও বাস্তবে অনেক ক্ষেত্রেই অপরাধীরা শাস্তি পাচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৮ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত দেশে মোট ২৭,৪৭৯ টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে। অর্থাৎ প্রতি বছর গড়ে ৫০০০ এর বেশি নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। উৎস( প্রথম আলোর রিপোর্ট) । উল্লেখ্য অনেক সময় ধর্ষণের ঘটনা প্রতিবেদন করা হয় না বা প্রকাশ্যে আসে না যা প্রকৃত পরিসংখ্যানকে প্রভাবিত করতে পারে।
সম্প্রতি ঢাকা থেকে রাজশাহীর গামী একটি যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি ও দুই নারী যাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছে। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি রাতে গাবতলী থেকে ছেড়ে যাওয়া ইউনিক রোড রয়েলস পরিবহনের বাসটি গাজীপুরের চন্দ্রা এলাকায় পৌঁছালে কয়েকজন যাত্রীবেশে থাকা ডাকাত দল অস্ত্রের মুখে বাসটি নিয়ন্ত্রণে নেয়।তারা যাত্রীদের কাছ থেকে নগদ অর্থ স্বর্ণালংকার সহ মূল্যবান সামগ্রী লুট করে এবং দুই নারী যাত্রীকে যৌণ নিপীড়ন করে।
পরে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর এলাকায় ডাকাতরা বাস থেকে নেমে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী যাত্রীরা নাটোরের বরাইগ্রাম থানায় বিষয়টি জানালে পুলিশ বাসের চালক সুপার ভাইজার ও সহকারীকে আটক করে। তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো মামলা দায়ের হয় নি ফলে আটক কৃতরা জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। এই ঘটনায় আরও তিনজনকে সাভার এলাকা থেকে আটক করা হয়েছে। তাদের মধ্যে একজনের বিরুদ্ধে পূর্বে বাস ডাকাতির পাঁচটি মামলা রয়েছে পুলিশ জানিয়েছে গ্রেফতারকৃতরা প্রাথমিক ভাবে ঘটনায় জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছে।
এছাড়াও ২০ ফেব্রুয়ারীর ঘটনা এক নারী মাওয়া ঘাটে ট্রলারে নদী পার হতে গিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। একটি শিশু শহীদ দিবসে ফুল কুড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয়। নরসিংদীতে গর্ভবতী নারীকে ৩ দিন আটক করে ধর্ষণ করা হয়। বাড়ির সম্পত্তি নিয়ে ঝগড়ার হাত ধরে বাড়ির মহিলাদের উপর অকথ্য নির্যাতন, ধর্ষণ চলছে প্রায় প্রতি জেলাতেই।
বাংলাদেশের ধর্ষণের সবোর্চ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড, তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অপরাধীরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পায় না। মামলা দীর্ঘ সময় চলতে থাকায় ভুক্তভোগী ও তার পরিবার ন্যায় বিচার পেতে হিমসিম খায়। নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে শুধু কঠোর আইন যথেষ্ট নয়, আইনের প্রয়োগ করতে হবে, সাথে প্রয়োজন সামাজিক সচেতনতা ও সঠিক শিক্ষা ও নৈতিক মূল্যবোধ।
লিখাঃ মোছাঃ কাবা কাকলী,
শিক্ষার্থী, কবি নজরুল সরকারি কলেজ।