ঢাকা , মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫
শিরোনাম:
শাহরাস্তিতে কৃষি জমির মাটি কাটায় মোবাইল কোর্টে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা হজ পালনে সৌদি আরব গমন করছেন মোঃ আবুল কালাম ও সহধর্মিণী শাহরাস্তিতে কৃষিজমির মাটি কাটায় মোবাইল কোর্ট: এক ব্যক্তি কারাদণ্ড, ট্রাক্টর জব্দ শাহরাস্তিতে কৃষিজমির মাটি কাটায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা গাজীপুরে ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় শিক্ষার্থীর ওপর হামলা চট্টগ্রাম পলোগ্রাউন্ডে শাহরাস্তি যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের সাড়া জাগানো উপস্থিতি গাজীপুর -৩ আসনের জনগণের সেবক হতে চায় ডাঃ ক্যাঃ (অবঃ) এম এ আঃ সালাম আকন্দ রাত হলেই আলোয় ঝলমল শাহরাস্তির ‘রাগৈ কাঠের মসজিদ’ প্রবাসে রুজি, দেশে হাহাকার: শাহরাস্তিতে ওমান প্রবাসীর বাড়িতে হামলা, আহত মা-বোন ৭৫ বছর বয়সী বিধবা গৃহবধূকে আপন ভাই ও ভাতিজাদের মারধর, থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের

‘তারেক রহমান আসছে’—এই বার্তাই কি বদলে দেবে বাংলাদেশের রাজনীতির গতিপথ?

বাংলাদেশের রাজনীতিতে যখন অস্থিরতা, অনিশ্চয়তা আর জনআস্থাহীনতা চরমে, তখন এক ব্যক্তির নাম ঘুরে ফিরে উচ্চারিত হচ্ছে রাজনৈতিক বিশ্লেষক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের মুখে মুখে—তিনি তারেক রহমান। দীর্ঘ নির্বাসিত জীবনের পরও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে যে সাংগঠনিক শক্তি ও রাজনৈতিক দূরদর্শিতার পরিচয় তিনি দিয়েছেন, তা ক্রমেই তাকে একটি ভিন্ন মাত্রার নেতায় রূপান্তরিত করেছে। প্রশ্ন উঠছে—এই তারেক রহমানই কি হয়ে উঠতে চলেছেন আগামী দিনের ‘গেইম চেঞ্জার’?

২০০৭ সালের ১/১১-এর পরবর্তী সময়ে গ্রেফতার, নির্যাতন ও রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে যুক্তরাজ্যে চিকিৎসা নিতে বাধ্য হন তারেক রহমান। অনেকে ভেবেছিলেন, এখানেই হয়তো তার রাজনৈতিক জীবনের অবসান ঘটবে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, প্রবাস থেকেই তিনি বিএনপিকে চালিত করে চলেছেন দীর্ঘ এক যুগের বেশি সময় ধরে। ভার্চুয়াল যোগাযোগ, কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত, নতুন নেতৃত্ব তৈরিতে দিকনির্দেশনা—সব কিছুর কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন তিনি। এরই মধ্যে বিএনপির সাংগঠনিক পুনর্গঠন, দক্ষ ও তরুণ নেতৃত্বের সমন্বয় এবং একবিংশ শতাব্দির উপযোগী রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রমাণ করেছে, তারেক রহমান শুধু একজন রাজনৈতিক উত্তরাধিকারী নন, বরং এক আধুনিক রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে চলেছেন।

তার রাজনীতি আজ আর শুধু ক্ষমতা পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি নয়—বরং একটি কাঠামোগত রাষ্ট্রপুনর্গঠনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। স্বচ্ছ প্রশাসন, জবাবদিহিমূলক শাসনব্যবস্থা এবং তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর সেবা—এই তিনটি স্তম্ভে দাঁড় করানো হচ্ছে ‘তারেক রহমানের ভিশন’। নিরাপদ ডিজিটাল বাংলাদেশ, গোপনীয়তার অধিকার নিশ্চিতকরণ এবং নাগরিক স্বাধীনতা রক্ষায় তিনি বারবার সোচ্চার হয়েছেন। বর্তমান সরকারের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে তাঁর কঠোর অবস্থান রাজনৈতিক সচেতনতা ও নাগরিক অধিকারের প্রতি তাঁর দায়বদ্ধতাকে সামনে নিয়ে এসেছে।

অর্থনীতিতেও তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি ব্যতিক্রমধর্মী। তিনি মনে করেন, শুধুমাত্র বৈদেশিক বিনিয়োগ নয়, দেশের নিজস্ব উৎপাদনক্ষমতা, কৃষি ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের সুযোগ দেওয়ার মাধ্যমে অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা অর্জন সম্ভব। একইসঙ্গে তিনি জিওপলিটিকসের জটিল বাস্তবতায় বাংলাদেশকে ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থানে রাখার কৌশল অবলম্বন করছেন—যেখানে ভারত, চীন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষা করেও জাতীয় স্বার্থে আপসহীন অবস্থান থাকবে।

ব্রিটিশ আর্মির সাবেক মেজর জেনারেল ড. একেএম শামসুল ইসলাম সম্প্রতি মন্তব্য করেছেন, “তারেক রহমান হচ্ছেন সেই কৌশলী নেতা, যিনি শুধু রাজনীতিক নন, বরং স্ট্র্যাটেজিক থিঙ্কার।” বিশ্লেষকরা বলছেন, তাঁর নেতৃত্বে বিএনপি এখন আর স্রেফ একটি আন্দোলনকারী দল নয়, বরং একটি বিকল্প রাষ্ট্রীয় দর্শন নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে—যার মূলে আছে স্বপ্ন, পরিকল্পনা এবং বাস্তবতা।

অতএব, প্রশ্নটা এখন খুব সহজ: ‘তারেক রহমান আসছেন’—এই ঘোষণাটি কি শুধু একটি রাজনৈতিক বার্তা, নাকি এটি এক নতুন সময়ের আগমনী ঘণ্টা? বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন পর কারও নাম যদি জনতার মধ্যে আলোড়ন তোলে, আশা জাগায়, তবে তারেক রহমানই সম্ভবত সেই একমাত্র নাম। এবং সেই সম্ভাবনাই এখন বাস্তব হওয়ার অপেক্ষায়।

Facebook Comments Box
Tag :
জনপ্রিয় সংবাদ

শাহরাস্তিতে কৃষি জমির মাটি কাটায় মোবাইল কোর্টে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা

‘তারেক রহমান আসছে’—এই বার্তাই কি বদলে দেবে বাংলাদেশের রাজনীতির গতিপথ?

Update Time : ০২:৫৫:৪৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫

বাংলাদেশের রাজনীতিতে যখন অস্থিরতা, অনিশ্চয়তা আর জনআস্থাহীনতা চরমে, তখন এক ব্যক্তির নাম ঘুরে ফিরে উচ্চারিত হচ্ছে রাজনৈতিক বিশ্লেষক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের মুখে মুখে—তিনি তারেক রহমান। দীর্ঘ নির্বাসিত জীবনের পরও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে যে সাংগঠনিক শক্তি ও রাজনৈতিক দূরদর্শিতার পরিচয় তিনি দিয়েছেন, তা ক্রমেই তাকে একটি ভিন্ন মাত্রার নেতায় রূপান্তরিত করেছে। প্রশ্ন উঠছে—এই তারেক রহমানই কি হয়ে উঠতে চলেছেন আগামী দিনের ‘গেইম চেঞ্জার’?

২০০৭ সালের ১/১১-এর পরবর্তী সময়ে গ্রেফতার, নির্যাতন ও রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে যুক্তরাজ্যে চিকিৎসা নিতে বাধ্য হন তারেক রহমান। অনেকে ভেবেছিলেন, এখানেই হয়তো তার রাজনৈতিক জীবনের অবসান ঘটবে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, প্রবাস থেকেই তিনি বিএনপিকে চালিত করে চলেছেন দীর্ঘ এক যুগের বেশি সময় ধরে। ভার্চুয়াল যোগাযোগ, কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত, নতুন নেতৃত্ব তৈরিতে দিকনির্দেশনা—সব কিছুর কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন তিনি। এরই মধ্যে বিএনপির সাংগঠনিক পুনর্গঠন, দক্ষ ও তরুণ নেতৃত্বের সমন্বয় এবং একবিংশ শতাব্দির উপযোগী রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রমাণ করেছে, তারেক রহমান শুধু একজন রাজনৈতিক উত্তরাধিকারী নন, বরং এক আধুনিক রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে চলেছেন।

তার রাজনীতি আজ আর শুধু ক্ষমতা পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি নয়—বরং একটি কাঠামোগত রাষ্ট্রপুনর্গঠনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। স্বচ্ছ প্রশাসন, জবাবদিহিমূলক শাসনব্যবস্থা এবং তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর সেবা—এই তিনটি স্তম্ভে দাঁড় করানো হচ্ছে ‘তারেক রহমানের ভিশন’। নিরাপদ ডিজিটাল বাংলাদেশ, গোপনীয়তার অধিকার নিশ্চিতকরণ এবং নাগরিক স্বাধীনতা রক্ষায় তিনি বারবার সোচ্চার হয়েছেন। বর্তমান সরকারের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে তাঁর কঠোর অবস্থান রাজনৈতিক সচেতনতা ও নাগরিক অধিকারের প্রতি তাঁর দায়বদ্ধতাকে সামনে নিয়ে এসেছে।

অর্থনীতিতেও তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি ব্যতিক্রমধর্মী। তিনি মনে করেন, শুধুমাত্র বৈদেশিক বিনিয়োগ নয়, দেশের নিজস্ব উৎপাদনক্ষমতা, কৃষি ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের সুযোগ দেওয়ার মাধ্যমে অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা অর্জন সম্ভব। একইসঙ্গে তিনি জিওপলিটিকসের জটিল বাস্তবতায় বাংলাদেশকে ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থানে রাখার কৌশল অবলম্বন করছেন—যেখানে ভারত, চীন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষা করেও জাতীয় স্বার্থে আপসহীন অবস্থান থাকবে।

ব্রিটিশ আর্মির সাবেক মেজর জেনারেল ড. একেএম শামসুল ইসলাম সম্প্রতি মন্তব্য করেছেন, “তারেক রহমান হচ্ছেন সেই কৌশলী নেতা, যিনি শুধু রাজনীতিক নন, বরং স্ট্র্যাটেজিক থিঙ্কার।” বিশ্লেষকরা বলছেন, তাঁর নেতৃত্বে বিএনপি এখন আর স্রেফ একটি আন্দোলনকারী দল নয়, বরং একটি বিকল্প রাষ্ট্রীয় দর্শন নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে—যার মূলে আছে স্বপ্ন, পরিকল্পনা এবং বাস্তবতা।

অতএব, প্রশ্নটা এখন খুব সহজ: ‘তারেক রহমান আসছেন’—এই ঘোষণাটি কি শুধু একটি রাজনৈতিক বার্তা, নাকি এটি এক নতুন সময়ের আগমনী ঘণ্টা? বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন পর কারও নাম যদি জনতার মধ্যে আলোড়ন তোলে, আশা জাগায়, তবে তারেক রহমানই সম্ভবত সেই একমাত্র নাম। এবং সেই সম্ভাবনাই এখন বাস্তব হওয়ার অপেক্ষায়।

Facebook Comments Box