চাঁদপুর-৫ (হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি) আসনে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে জমে উঠেছে আলোচনার পরিসর। এই আসনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন সম্ভাব্য জোটের পক্ষ থেকে যাঁর নাম বারবার আলোচনায় আসছে, তিনি হলেন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. নেয়ামুল বশির। রাজনীতি, নেতৃত্ব, শিক্ষা, পেশাগত জীবন ও ব্যক্তিগত সুনামের যে সম্মিলন তাঁর মধ্যে রয়েছে, তা এককথায় বিরল।
ড. নেয়ামুল বশিরকে নিয়ে এলডিপির অভ্যন্তরে যেমন রয়েছে ব্যাপক আস্থা ও সম্মান, তেমনি জনগণের মাঝেও তিনি একজন পরিচ্ছন্ন, আধুনিক ও দূরদর্শী রাজনীতিক হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছেন। তিনি ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতির সঙ্গে জড়িত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় থেকেই বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে তাঁর রাজনৈতিক যাত্রা শুরু হয়। ২০০৬ সালে এলডিপি প্রতিষ্ঠার পর তিনি সরাসরি যুক্ত হন কেন্দ্রীয় জাতীয় রাজনীতির সঙ্গে। বিশেষ করে ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপি জোটের যুগপৎ আন্দোলন ও প্রতিবাদ কর্মসূচিতে এলডিপির সক্রিয় অবস্থানে তিনি ছিলেন একজন প্রথম সারির সংগঠক।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমান সময়ের রাজনীতিতে এমন ‘ক্লিন ইমেজ’ ও প্রফেশনাল ব্যাকগ্রাউন্ড সম্পন্ন নেতা খুবই দুর্লভ। তাঁর আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষাগত যোগ্যতা তাঁকে করে তুলেছে আধুনিক ও বাস্তবমুখী চিন্তাশীল নেতা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগ থেকে মাস্টার্স, যুক্তরাষ্ট্র থেকে পিএইচডি, কানাডা থেকে চার্টার্ড বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেটর এবং যুক্তরাজ্য থেকে ফেলো ফিনান্সিয়াল প্ল্যানার হওয়ার পরও তিনি দেশের মাটি ছেড়ে যাননি। একজন সফল শিল্পোদ্যোক্তা হিসেবে বর্তমানে তিনি ডেনিম গ্রুপের চেয়ারম্যান এবং বিজিএমইএ, ঢাকা ও গাজীপুর চেম্বার অব কমার্সের সক্রিয় সদস্য। এমন ব্যক্তিত্বই হতে পারেন একটি নির্বাচনী আসনের জন্য দীর্ঘমেয়াদী ও টেকসই উন্নয়নের পথপ্রদর্শক।
দলীয়ভাবে এলডিপি বর্তমানে জাতীয় রাজনীতির একটি নির্ভরযোগ্য শরিকদল। কর্নেল অলি আহমদ বীরবিক্রমের নেতৃত্বে দলটি বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে একনিষ্ঠভাবে রাজপথে সক্রিয় থেকেছে। দলটির আরেক বিশেষ দিক হচ্ছে—এলডিপির প্রেসিডেন্ট ও মহাসচিব দুজনই বীর মুক্তিযোদ্ধা, যা দেশের অন্য কোনো বড় রাজনৈতিক দলে একসাথে দেখা যায় না। এ কারণেই এলডিপি জোট রাজনীতিতে একটি আদর্শিক অবস্থান থেকে দৃঢ় ভূমিকা রেখে চলেছে।
২০১৮ সালে চাঁদপুর-৫ আসনে এলডিপির পক্ষ থেকে ড. বশিরের মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল ছিল, যদিও কৌশলগত কারণে সে সময় মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হয়। এবার পরিস্থিতি একেবারে ভিন্ন। এলাকা জুড়ে তাঁর জনপ্রিয়তা, রাজনৈতিক স্থিরতা ও দলীয় গ্রহণযোগ্যতা মিলিয়ে তাঁকে নিয়ে আশাবাদী পুরো জোট। বিএনপির সম্ভাব্য শরিকদের তালিকায় এলডিপি শীর্ষে থাকার কারণে চাঁদপুর-৫ এ ধানের শীষ প্রতীকে এলডিপির মনোনয়ন দাবি এখন জোরালো।
ড. নেয়ামুল বশিরের রাজনৈতিক পরিবারের ঐতিহ্যও উল্লেখযোগ্য। দাদা আফসার উদ্দিন মজুমদার ছিলেন অবিভক্ত গন্ধর্বপুর ইউনিয়ন বোর্ডের টানা ২২ বছর প্রেসিডেন্ট। পিতা এম.এ মান্নান মজুমদার ছিলেন সরকারি কর্মকর্তা এবং স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম ছাত্রনেতা। পারিবারিক এই রাজনৈতিক উত্তরাধিকার, ব্যক্তিগত সততা, শিক্ষা ও সংগঠনিক দক্ষতা তাঁকে একটি প্রজন্মের জন্য অনুকরণীয় নেতায় পরিণত করেছে।
স্থানীয়ভাবে তাঁর জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা এখন সর্বজনবিদিত। দলমত নির্বিশেষে অনেকেই মনে করছেন, চাঁদপুর-৫ এর জন্য প্রয়োজন এমন একজন প্রার্থী, যিনি রাজনীতির পাশাপাশি উন্নয়ন পরিকল্পনাও বোঝেন। সেই যোগ্যতা ও দূরদর্শিতা দুটোই রয়েছে ড. বশিরের মাঝে।
একটি প্রশ্ন এখন স্থানীয় জনগণের মুখে মুখে—”রাজনীতি কি এমনই হওয়া উচিত নয়?” যেখানে একজন নেতা স্বচ্ছ, শিক্ষিত, অভিজ্ঞ, পরীক্ষিত এবং একইসঙ্গে জনগণের পাশে থাকা একজন বাস্তব কর্মী। সে প্রশ্নের উত্তরে অনেকেই আশাবাদী হয়ে বলছেন—চাঁদপুর-৫ এর জন্য সেই নামটি হলো ড. নেয়ামুল বশির।