ঢাকা , মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫
শিরোনাম:
শাহরাস্তিতে কৃষি জমির মাটি কাটায় মোবাইল কোর্টে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা হজ পালনে সৌদি আরব গমন করছেন মোঃ আবুল কালাম ও সহধর্মিণী শাহরাস্তিতে কৃষিজমির মাটি কাটায় মোবাইল কোর্ট: এক ব্যক্তি কারাদণ্ড, ট্রাক্টর জব্দ শাহরাস্তিতে কৃষিজমির মাটি কাটায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা গাজীপুরে ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় শিক্ষার্থীর ওপর হামলা চট্টগ্রাম পলোগ্রাউন্ডে শাহরাস্তি যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের সাড়া জাগানো উপস্থিতি গাজীপুর -৩ আসনের জনগণের সেবক হতে চায় ডাঃ ক্যাঃ (অবঃ) এম এ আঃ সালাম আকন্দ রাত হলেই আলোয় ঝলমল শাহরাস্তির ‘রাগৈ কাঠের মসজিদ’ প্রবাসে রুজি, দেশে হাহাকার: শাহরাস্তিতে ওমান প্রবাসীর বাড়িতে হামলা, আহত মা-বোন ৭৫ বছর বয়সী বিধবা গৃহবধূকে আপন ভাই ও ভাতিজাদের মারধর, থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের

ইঞ্জিনিয়ার মমিনুল হক: সাহস, সততা আর সেবার অন্যরকম নাম

রাজনীতি এখন যেখানে প্রায়শই হয়ে উঠেছে ক্ষমতা আর লোভের কৌশলী খেলা, সেখানে দাঁড়িয়ে ইঞ্জিনিয়ার মমিনুল হক যেন এক আলাদা ধাঁচের নাম। একজন ভিন্ন ধারার নেতা, যিনি রাজনীতিকে দেখেন জনসেবা হিসেবে, আর নেতৃত্বকে বোঝেন দায়িত্ব হিসেবে। হাজারো অনুসারীর হৃদয়ের মানুষ “মমিন ভাই”—একজন যিনি হাল ধরেন, যখন সিস্টেম মুখ ফিরিয়ে নেয়।

চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলার ৬নং বড়কুল পূর্ব ইউনিয়নে এক সাধারণ ঘরের জন্ম মমিনুল হকের। কিন্তু তার বেড়ে ওঠার গল্পটা মোটেও সাধারণ নয়। পরিবারের শিকড় থেকেই তিনি শিখেছেন সংগ্রাম, শৃঙ্খলা ও সততার অর্থ। তাঁর পিতা ছিলেন একজন শিক্ষক, যিনি বিশ্বাস করতেন—মানুষ গড়ার চেয়ে বড় কোনো কাজ নেই। সেই শিক্ষা আর পারিবারিক মূল্যবোধ নিয়ে মমিনুল হক আজকের অবস্থানে।

রাজনীতিতে আসার অনেক আগেই নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন একজন স্বনামধন্য ব্যবসায়ী হিসেবে। দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় ডেভেলপার প্রতিষ্ঠান মার্ক বিল্ডার্স এবং মার্ক ফুড-এর প্রতিষ্ঠাতা ও স্বত্বাধিকারী তিনি। পেশাদারিত্ব, সততা ও আধুনিক ব্যবস্থাপনায় এই দুটি প্রতিষ্ঠানের সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে দেশজুড়ে। কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে রেখেছেন উল্লেখযোগ্য ভূমিকা। কর্মীদের প্রতি ভালোবাসা ও দায়িত্বশীল মনোভাব তাঁকে কর্মী বান্ধব উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠা দিয়েছে।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির হাত ধরে রাজনীতিতে আসলেও শুরুটা মোটেই সহজ ছিল না। নিজ দলের ভেতরেই তাকে সহ্য করতে হয়েছে অবহেলা ও বৈষম্য। কিন্তু থেমে থাকেননি। বরং মাঠে-ময়দানে থেকে জনসাধারণের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন। সাবেক এমপি মরহুম এম এ মতিনের জীবদ্দশায়ই হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তির রাজনীতিতে নিজের ভিত্তি মজবুত করেন। পরবর্তীতে ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হন জেলা বিএনপির সভাপতি হিসেবে—যেখানে তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন ঐক্য, শৃঙ্খলা ও নীতিনৈতিকতার মাধ্যমে।

চাঁদপুর স্টেডিয়ামে বিএনপির চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে এনে সফল জনসভার সভাপতি হওয়া ছিল তাঁর এক বড় অর্জন, যা তাঁর সাংগঠনিক দক্ষতার প্রতীক হয়ে আছে।

২০২৪ সালের আগস্ট—সারা দেশের মতো হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তিও ছিল উত্তপ্ত। কিন্তু যেখানে অন্যত্র সহিংসতা, সন্ত্রাস ও হুমকি ছিল নিত্য ঘটনা, সেখানে এই দুই উপজেলার পরিস্থিতি ছিল তুলনামূলক শান্ত। কারণ একটাই—ইঞ্জিনিয়ার মমিনুল হকের কঠোর নিয়ন্ত্রণ আর বিচক্ষণ সিদ্ধান্ত।

৫ আগস্ট, সরকার পতনের খবরে যখন জনতা উল্লাসে মেতে উঠছিল, তখন তিনি ব্যক্তিগতভাবে ফোন করে প্রতিটি ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড নেতাদের বলেন—“কোনো বাড়ি ঘর, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি যেন হামলার শিকার না হয়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে।” সেই নেতৃত্বে কেউ সাহস পায়নি বিশৃঙ্খলা ছড়াতে।

যেখানে প্রয়োজন, সেখানেই কঠোরতা—দলীয় শৃঙ্খলা বজায় রাখতে দু’জন কর্মীকে বহিষ্কার করতে দ্বিধা করেননি। টোরাগড় হত্যাকাণ্ডের সময়ও তিনি পরিষ্কার করে বলে দেন—“যারা অপরাধ করেছে কেবল তারাই মামলার আসামি হবে, নিরীহ কেউ নয়।” ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লুটপাটের পর মামলা হয় তাঁর নির্দেশনা মেনে।

প্রতিক্রিয়াশীল নেতাদের চেয়ে আলাদা করে ইঞ্জিনিয়ার মমিনুল হককে তুলে ধরে তাঁর মানবিকতা। আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসার জন্য নিজের পক্ষ থেকে দেন আড়াই লাখ টাকা অনুদান। হিন্দু সম্প্রদায়ের উদ্দেশে তাঁর বার্তা ছিল হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া—“তারা আমাদের ভাই, তাদের ভালো রাখার দায়িত্বও আমাদের।”

এই মনোভাব, এই দৃষ্টিভঙ্গিই তাঁকে বানিয়েছে নেতা থেকে অভিভাবক। একজন মমিনুল হক মানে অস্থির সময়ের স্থির কণ্ঠ।

তিনি বারবার বলেন, “আমরা চাই নির্বাচনের মাধ্যমে পরিবর্তন, ষড়যন্ত্র নয়।” তাঁর রাজনৈতিক দর্শন শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। কারো ক্ষতি করে নয়, নিজের আদর্শ দিয়ে জয় করতে চান জনগণের মন।

ইঞ্জিনিয়ার মমিনুল হক এখন আর শুধু এক রাজনৈতিক নেতা নন—তিনি এক অনুকরণীয় চরিত্র। বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে যাঁরা শুদ্ধতা, মানবিকতা এবং জবাবদিহিতার স্বপ্ন দেখেন, তাঁদের জন্য তিনি এক আশার আলো। তাঁর জীবনের প্রতিটি অধ্যায় যেন শেখার এক অনন্য পাঠ।

Facebook Comments Box
Tag :
জনপ্রিয় সংবাদ

শাহরাস্তিতে কৃষি জমির মাটি কাটায় মোবাইল কোর্টে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা

ইঞ্জিনিয়ার মমিনুল হক: সাহস, সততা আর সেবার অন্যরকম নাম

Update Time : ০৭:৩৫:৪৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫

রাজনীতি এখন যেখানে প্রায়শই হয়ে উঠেছে ক্ষমতা আর লোভের কৌশলী খেলা, সেখানে দাঁড়িয়ে ইঞ্জিনিয়ার মমিনুল হক যেন এক আলাদা ধাঁচের নাম। একজন ভিন্ন ধারার নেতা, যিনি রাজনীতিকে দেখেন জনসেবা হিসেবে, আর নেতৃত্বকে বোঝেন দায়িত্ব হিসেবে। হাজারো অনুসারীর হৃদয়ের মানুষ “মমিন ভাই”—একজন যিনি হাল ধরেন, যখন সিস্টেম মুখ ফিরিয়ে নেয়।

চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলার ৬নং বড়কুল পূর্ব ইউনিয়নে এক সাধারণ ঘরের জন্ম মমিনুল হকের। কিন্তু তার বেড়ে ওঠার গল্পটা মোটেও সাধারণ নয়। পরিবারের শিকড় থেকেই তিনি শিখেছেন সংগ্রাম, শৃঙ্খলা ও সততার অর্থ। তাঁর পিতা ছিলেন একজন শিক্ষক, যিনি বিশ্বাস করতেন—মানুষ গড়ার চেয়ে বড় কোনো কাজ নেই। সেই শিক্ষা আর পারিবারিক মূল্যবোধ নিয়ে মমিনুল হক আজকের অবস্থানে।

রাজনীতিতে আসার অনেক আগেই নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন একজন স্বনামধন্য ব্যবসায়ী হিসেবে। দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় ডেভেলপার প্রতিষ্ঠান মার্ক বিল্ডার্স এবং মার্ক ফুড-এর প্রতিষ্ঠাতা ও স্বত্বাধিকারী তিনি। পেশাদারিত্ব, সততা ও আধুনিক ব্যবস্থাপনায় এই দুটি প্রতিষ্ঠানের সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে দেশজুড়ে। কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে রেখেছেন উল্লেখযোগ্য ভূমিকা। কর্মীদের প্রতি ভালোবাসা ও দায়িত্বশীল মনোভাব তাঁকে কর্মী বান্ধব উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠা দিয়েছে।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির হাত ধরে রাজনীতিতে আসলেও শুরুটা মোটেই সহজ ছিল না। নিজ দলের ভেতরেই তাকে সহ্য করতে হয়েছে অবহেলা ও বৈষম্য। কিন্তু থেমে থাকেননি। বরং মাঠে-ময়দানে থেকে জনসাধারণের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন। সাবেক এমপি মরহুম এম এ মতিনের জীবদ্দশায়ই হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তির রাজনীতিতে নিজের ভিত্তি মজবুত করেন। পরবর্তীতে ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হন জেলা বিএনপির সভাপতি হিসেবে—যেখানে তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন ঐক্য, শৃঙ্খলা ও নীতিনৈতিকতার মাধ্যমে।

চাঁদপুর স্টেডিয়ামে বিএনপির চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে এনে সফল জনসভার সভাপতি হওয়া ছিল তাঁর এক বড় অর্জন, যা তাঁর সাংগঠনিক দক্ষতার প্রতীক হয়ে আছে।

২০২৪ সালের আগস্ট—সারা দেশের মতো হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তিও ছিল উত্তপ্ত। কিন্তু যেখানে অন্যত্র সহিংসতা, সন্ত্রাস ও হুমকি ছিল নিত্য ঘটনা, সেখানে এই দুই উপজেলার পরিস্থিতি ছিল তুলনামূলক শান্ত। কারণ একটাই—ইঞ্জিনিয়ার মমিনুল হকের কঠোর নিয়ন্ত্রণ আর বিচক্ষণ সিদ্ধান্ত।

৫ আগস্ট, সরকার পতনের খবরে যখন জনতা উল্লাসে মেতে উঠছিল, তখন তিনি ব্যক্তিগতভাবে ফোন করে প্রতিটি ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড নেতাদের বলেন—“কোনো বাড়ি ঘর, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি যেন হামলার শিকার না হয়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে।” সেই নেতৃত্বে কেউ সাহস পায়নি বিশৃঙ্খলা ছড়াতে।

যেখানে প্রয়োজন, সেখানেই কঠোরতা—দলীয় শৃঙ্খলা বজায় রাখতে দু’জন কর্মীকে বহিষ্কার করতে দ্বিধা করেননি। টোরাগড় হত্যাকাণ্ডের সময়ও তিনি পরিষ্কার করে বলে দেন—“যারা অপরাধ করেছে কেবল তারাই মামলার আসামি হবে, নিরীহ কেউ নয়।” ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লুটপাটের পর মামলা হয় তাঁর নির্দেশনা মেনে।

প্রতিক্রিয়াশীল নেতাদের চেয়ে আলাদা করে ইঞ্জিনিয়ার মমিনুল হককে তুলে ধরে তাঁর মানবিকতা। আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসার জন্য নিজের পক্ষ থেকে দেন আড়াই লাখ টাকা অনুদান। হিন্দু সম্প্রদায়ের উদ্দেশে তাঁর বার্তা ছিল হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া—“তারা আমাদের ভাই, তাদের ভালো রাখার দায়িত্বও আমাদের।”

এই মনোভাব, এই দৃষ্টিভঙ্গিই তাঁকে বানিয়েছে নেতা থেকে অভিভাবক। একজন মমিনুল হক মানে অস্থির সময়ের স্থির কণ্ঠ।

তিনি বারবার বলেন, “আমরা চাই নির্বাচনের মাধ্যমে পরিবর্তন, ষড়যন্ত্র নয়।” তাঁর রাজনৈতিক দর্শন শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। কারো ক্ষতি করে নয়, নিজের আদর্শ দিয়ে জয় করতে চান জনগণের মন।

ইঞ্জিনিয়ার মমিনুল হক এখন আর শুধু এক রাজনৈতিক নেতা নন—তিনি এক অনুকরণীয় চরিত্র। বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে যাঁরা শুদ্ধতা, মানবিকতা এবং জবাবদিহিতার স্বপ্ন দেখেন, তাঁদের জন্য তিনি এক আশার আলো। তাঁর জীবনের প্রতিটি অধ্যায় যেন শেখার এক অনন্য পাঠ।

Facebook Comments Box