চাঁদপুর-৫ (হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি) আসন ঘিরে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তৎপরতা ও সম্ভাব্য প্রার্থীদের গণসংযোগ। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে আওয়ামী লীগের দখলে থাকা এই আসনে এবার বিএনপি, জামায়াতে ইসলাম, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মধ্যকার লড়াই জমে উঠতে শুরু করেছে।
বিএনপি থেকে এ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে যাঁরা আলোচনায় রয়েছেন, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার মো. মমিনুল হক। তিনি ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ছিলেন এবং এলাকায় একজন অভিজ্ঞ রাজনীতিক ও তৃণমূল সংগঠক হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয়। তাঁর অবস্থান এখনো অনেক ভোটারের কাছে দৃঢ় এবং শ্রদ্ধার স্থানে রয়েছে।
এছাড়া চাঁদপুর জেলা বিএনপি’র সদস্য ব্যারিস্টার মো. কামাল উদ্দিন সম্প্রতি এলাকা জুড়ে ব্যাপক গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। একজন তরুণ, শিক্ষিত এবং আধুনিক নেতৃত্বের প্রতীক হিসেবে তিনি দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠছেন। তাঁর নেতৃত্বে ছাত্র ও পেশাজীবী মহলে আশাবাদের সৃষ্টি হয়েছে।
বিএনপির আরেক সম্ভাব্য মনোনয়নপ্রার্থী বিএনপির কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন খোকন, যিনি দলটির যুবদল ঘরানার একজন বলিষ্ঠ নেতারূপে পরিচিত। তরুণ ও পরিবর্তনকামী ভোটারদের মাঝে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা দিন দিন বাড়ছে।
অন্যদিকে জামায়াতে ইসলাম থেকে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে উঠে এসেছেন মাওলানা আবুল হোসেন, যিনি দলটির একজন শীর্ষস্থানীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা এবং এলাকায় ধর্মভিত্তিক রাজনীতির পরিচিত মুখ। তাঁর প্রার্থীতা জামায়াতের সাংগঠনিক ভোট ব্যাংককে সক্রিয় করতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
এ ছাড়া জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী চাঁদপুর-৫ আসনে নির্বাচন করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তাঁর ব্যক্তিগত ইমেজ এবং জনসংযোগ দক্ষতা এই নির্বাচনে তাঁকে অন্যতম আলোচিত প্রার্থী করে তুলেছে, যদিও দলীয়ভাবে এনসিপির সাংগঠনিক ভিত্তি এখানকার বড় দলগুলোর তুলনায় তুলনামূলকভাবে দুর্বল।
এই আসনে দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগ থেকে সংসদ সদস্য ছিলেন রফিকুল ইসলাম, যিনি একাধিকবার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। তবে বর্তমানে তিনি এলাকায় ফিরে আসেননি এবং দলের স্থানীয় নেতৃত্বে স্পষ্ট বিভাজন থাকায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও এ আসনে চাপের মুখে রয়েছে।
তৃণমূলের জরিপে দেখা যাচ্ছে, তরুণ ভোটার, শিক্ষিত জনগোষ্ঠী এবং পরিবর্তন প্রত্যাশীরা এখন বিএনপির দিকেই ঝুঁকে রয়েছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিএনপি যদি সঠিক, গ্রহণযোগ্য এবং সাহসী নেতৃত্বকে মনোনয়ন দেয়, তাহলে চাঁদপুর-৫ আসনে দীর্ঘদিন পরে একটি শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন প্রত্যক্ষ করা যাবে।