চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার চিতোষী পূর্ব ইউনিয়নের কালচোঁ গ্রামে বসতবাড়ির পাশে গরুর খামার স্থাপন করে একটি পরিবারের ২২ জন সদস্যসহ পুরো এলাকার শতাধিক লোকের চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ফেলেছেন স্থানীয় জামাল হোসেন নামের এক ব্যক্তি। ইতোমধ্যেই ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পক্ষ থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দেওয়া হয়েছে।
ভুক্তভোগী আফরিমা আক্তার অভিযোগে জানান, একই বাড়িতে বসবাসকারী জামাল হোসেন তার বসতঘরের একেবারে সন্নিকটে গরুর খামার স্থাপন করেন। বর্তমানে সেখানে একাধিক গরু রয়েছে এবং প্রতিনিয়ত গোবর, মলমূত্র ও দুর্গন্ধে পরিবেশ চরমভাবে দূষিত হচ্ছে। এতে ঘরের সদস্যরা নানা রকম শ্বাসকষ্ট, বমি, অরুচিসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।
তিনি আরও জানান, পরিবারের ছোট-বড় সবাই এই গরুর খামারের কারণে মানসিক ও শারীরিকভাবে অসুস্থতায় ভুগছেন। দীর্ঘদিন ধরে মৌখিকভাবে জামাল হোসেনকে অনুরোধ করা হলেও তিনি তা কর্ণপাত করেননি। উপরন্তু তিনি স্থানীয়দের পরামর্শও উপেক্ষা করে নিজের মতো চলছেন।
স্থানীয় মেম্বার মোশারফ হোসেন মানিক জানান, আমরা এলাকাবাসী জামালকে বসতঘরের পাশে গোয়াল ঘর নির্মাণের ব্যাপারে নিষেধ করেছি। অথচ সে আমাদের কোন কথাই কর্ণপাত না করে নিজের মর্জি মতো গোয়াল ঘরটি নির্মাণ করে।
আফরিনা আক্তার লিখিত অভিযোগে প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছেন যাতে দ্রুত এই খামার সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় এবং ভবিষ্যতে বসতবাড়ির আশেপাশে এ ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকিপূর্ণ কার্যক্রম বন্ধ করা হয়।
জনস্বাস্থ্য রক্ষা ও সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ (সংশোধিত ২০১০) অনুযায়ী, জনবসতিপূর্ণ এলাকায় পরিবেশদূষণ সৃষ্টি করে এমন কার্যক্রম শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এছাড়াও, স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯ অনুযায়ী গ্রামীণ এলাকায় গৃহপালিত পশুর খামার স্থাপনের জন্য নির্ধারিত দূরত্ব বজায় রাখা বাধ্যতামূলক।
অভিযোগ প্রমাণিত হলে প্রশাসনিক ব্যবস্থা হিসেবে জরিমানা, খামার উচ্ছেদ বা আইনানুগ শাস্তির আওতায় আনা যেতে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
আফরিমা আক্তার প্রশাসনের প্রতি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, “আমরা শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করতে চাই, কেউ কারো ক্ষতি করুক তা চাই না। কিন্তু এমন জিনিস যখন পরিবারকে অসুস্থ করে ফেলে, তখন চুপ থাকা যায় না।”