ঢাকা , মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫
শিরোনাম:
শাহরাস্তিতে কৃষি জমির মাটি কাটায় মোবাইল কোর্টে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা হজ পালনে সৌদি আরব গমন করছেন মোঃ আবুল কালাম ও সহধর্মিণী শাহরাস্তিতে কৃষিজমির মাটি কাটায় মোবাইল কোর্ট: এক ব্যক্তি কারাদণ্ড, ট্রাক্টর জব্দ শাহরাস্তিতে কৃষিজমির মাটি কাটায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা গাজীপুরে ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় শিক্ষার্থীর ওপর হামলা চট্টগ্রাম পলোগ্রাউন্ডে শাহরাস্তি যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের সাড়া জাগানো উপস্থিতি গাজীপুর -৩ আসনের জনগণের সেবক হতে চায় ডাঃ ক্যাঃ (অবঃ) এম এ আঃ সালাম আকন্দ রাত হলেই আলোয় ঝলমল শাহরাস্তির ‘রাগৈ কাঠের মসজিদ’ প্রবাসে রুজি, দেশে হাহাকার: শাহরাস্তিতে ওমান প্রবাসীর বাড়িতে হামলা, আহত মা-বোন ৭৫ বছর বয়সী বিধবা গৃহবধূকে আপন ভাই ও ভাতিজাদের মারধর, থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের

বেপরোয়া গতিতে বাড়ছে প্রাণহানি: কিশোরদের মোটরসাইকেল দেওয়া কতটা নিরাপদ?

চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলাসহ সারাদেশে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে তরুণ চালকদের মধ্যে অসচেতনতা এবং বেপরোয়া গতি অনেক প্রাণহানির কারণ হয়ে উঠছে। অভিভাবকদের এখনই সচেতন হওয়া জরুরি, অন্যথায় এই প্রবণতা আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।

শাহরাস্তিতে বাড়ছে দুর্ঘটনা:
শাহরাস্তি উপজেলায় সাম্প্রতিক সময়ে একাধিক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। গত ফেব্রুয়ারিতে মেহের স্টেশন এলাকায় চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কে এক মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় দুই আরোহী নিহত হন। এছাড়া, জানুয়ারিতে দোয়াভাঙ্গা-পানিওয়ালা সড়কের লোটরা এলাকায় ট্রাকের চাপায় এক মোটরসাইকেল আরোহী প্রাণ হারান। স্থানীয়দের মতে, দ্রুতগতি এবং ট্রাফিক আইন না মানার প্রবণতা এসব দুর্ঘটনার মূল কারণ।

পরিসংখ্যানে ভয়াবহ চিত্র:
সড়ক দুর্ঘটনার পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে ১৮ থেকে ৪৫ বছর বয়সীরা বেশি। ১৩ থেকে ১৭ বছর বয়সীদের মধ্যেও দুর্ঘটনার হার উদ্বেগজনক। অতিরিক্ত গতি, ট্রাফিক আইন না মানা, হেলমেট ব্যবহার না করা এবং অদক্ষতার কারণে এসব দুর্ঘটনা ঘটছে।

গুণীজনদের মতামত:
সড়ক নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের মতে, সন্তানদের মোটরসাইকেল ব্যবহারের আগে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ এবং সচেতনতা প্রদান করা জরুরি। জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা বিশ্লেষক অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, “তরুণদের ট্রাফিক আইন সম্পর্কে সচেতন করতে হবে। তারা যদি নিয়ম মানে, তবে দুর্ঘটনার সংখ্যা অনেকাংশে কমে যাবে।” ট্রাফিক আইন বিশেষজ্ঞ ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হাসান বলেন, “অভিভাবকদের উচিত সন্তানদের হেলমেট ও অন্যান্য সুরক্ষা উপকরণ ব্যবহারে বাধ্য করা এবং ট্রাফিক নিয়ম-কানুন সম্পর্কে জানানো।”

ঈদের সময় বিশেষ সতর্কতা প্রয়োজন:
ঈদের সময় গ্রামে ফেরার পথে মোটরসাইকেলের ব্যবহার ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়। অনেক অভিভাবক কিশোরদের হাতে মোটরসাইকেল তুলে দেন, যা মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। এই সময়ে গ্রামে ফাঁকা রাস্তা এবং দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়ার প্রবণতা অনেক দুর্ঘটনার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। বিশেষ করে অপ্রাপ্তবয়স্ক চালকদের ক্ষেত্রে এই ঝুঁকি আরও বেশি।

কী করণীয়?:
সড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর পাশাপাশি পরিবারকেও দায়িত্ব নিতে হবে। সন্তানদের মোটরসাইকেল ব্যবহারের আগে তাদের সচেতন করা, নিরাপত্তা সরঞ্জাম নিশ্চিত করা এবং ট্রাফিক আইন মেনে চলতে উদ্বুদ্ধ করাই হতে পারে দুর্ঘটনা রোধের মূল উপায়।

Facebook Comments Box
Tag :
জনপ্রিয় সংবাদ

শাহরাস্তিতে কৃষি জমির মাটি কাটায় মোবাইল কোর্টে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা

বেপরোয়া গতিতে বাড়ছে প্রাণহানি: কিশোরদের মোটরসাইকেল দেওয়া কতটা নিরাপদ?

Update Time : ০৫:০৯:৩৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩১ মার্চ ২০২৫

চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলাসহ সারাদেশে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে তরুণ চালকদের মধ্যে অসচেতনতা এবং বেপরোয়া গতি অনেক প্রাণহানির কারণ হয়ে উঠছে। অভিভাবকদের এখনই সচেতন হওয়া জরুরি, অন্যথায় এই প্রবণতা আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।

শাহরাস্তিতে বাড়ছে দুর্ঘটনা:
শাহরাস্তি উপজেলায় সাম্প্রতিক সময়ে একাধিক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। গত ফেব্রুয়ারিতে মেহের স্টেশন এলাকায় চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কে এক মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় দুই আরোহী নিহত হন। এছাড়া, জানুয়ারিতে দোয়াভাঙ্গা-পানিওয়ালা সড়কের লোটরা এলাকায় ট্রাকের চাপায় এক মোটরসাইকেল আরোহী প্রাণ হারান। স্থানীয়দের মতে, দ্রুতগতি এবং ট্রাফিক আইন না মানার প্রবণতা এসব দুর্ঘটনার মূল কারণ।

পরিসংখ্যানে ভয়াবহ চিত্র:
সড়ক দুর্ঘটনার পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে ১৮ থেকে ৪৫ বছর বয়সীরা বেশি। ১৩ থেকে ১৭ বছর বয়সীদের মধ্যেও দুর্ঘটনার হার উদ্বেগজনক। অতিরিক্ত গতি, ট্রাফিক আইন না মানা, হেলমেট ব্যবহার না করা এবং অদক্ষতার কারণে এসব দুর্ঘটনা ঘটছে।

গুণীজনদের মতামত:
সড়ক নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের মতে, সন্তানদের মোটরসাইকেল ব্যবহারের আগে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ এবং সচেতনতা প্রদান করা জরুরি। জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা বিশ্লেষক অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, “তরুণদের ট্রাফিক আইন সম্পর্কে সচেতন করতে হবে। তারা যদি নিয়ম মানে, তবে দুর্ঘটনার সংখ্যা অনেকাংশে কমে যাবে।” ট্রাফিক আইন বিশেষজ্ঞ ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হাসান বলেন, “অভিভাবকদের উচিত সন্তানদের হেলমেট ও অন্যান্য সুরক্ষা উপকরণ ব্যবহারে বাধ্য করা এবং ট্রাফিক নিয়ম-কানুন সম্পর্কে জানানো।”

ঈদের সময় বিশেষ সতর্কতা প্রয়োজন:
ঈদের সময় গ্রামে ফেরার পথে মোটরসাইকেলের ব্যবহার ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়। অনেক অভিভাবক কিশোরদের হাতে মোটরসাইকেল তুলে দেন, যা মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। এই সময়ে গ্রামে ফাঁকা রাস্তা এবং দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়ার প্রবণতা অনেক দুর্ঘটনার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। বিশেষ করে অপ্রাপ্তবয়স্ক চালকদের ক্ষেত্রে এই ঝুঁকি আরও বেশি।

কী করণীয়?:
সড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর পাশাপাশি পরিবারকেও দায়িত্ব নিতে হবে। সন্তানদের মোটরসাইকেল ব্যবহারের আগে তাদের সচেতন করা, নিরাপত্তা সরঞ্জাম নিশ্চিত করা এবং ট্রাফিক আইন মেনে চলতে উদ্বুদ্ধ করাই হতে পারে দুর্ঘটনা রোধের মূল উপায়।

Facebook Comments Box