ঢাকা , রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম:
“শাহরাস্তিতে ইসলামী আন্দোলনের মজলিসে শূরার অধিবেশন ২০২৫ সম্পন্ন: নতুন নেতৃত্বে যাত্রা শুরু” ‘তারেক রহমান আসছে’—এই বার্তাই কি বদলে দেবে বাংলাদেশের রাজনীতির গতিপথ? কচুয়ায় দুই ভাইয়ের বর্বর হামলায় গুরুতর আহত বড় ভাই ও ভাবি চাঁদপুর-৫ আসনে এলডিপির হেভিওয়েট প্রার্থী ড. নেয়ামুল বশির, পরিচ্ছন্ন নেতৃত্বের নতুন আশার আলো শাহরাস্তিতে ভূমি ব্যবস্থাপনা পরিদর্শনে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ইঞ্জিনিয়ার মমিনুল হক: সাহস, সততা আর সেবার অন্যরকম নাম শাহরাস্তিতে প্রণোদনা কর্মসূচিতে ১৩০০ কৃষক পেলেন বিনামূল্যে বীজ ও সার “আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত, মাতৃভূমিতে প্রত্যাশার প্রতীক: চাঁদপুর-৫ আসনে বিএনপি’র আলোচিত নাম আনোয়ার হোসেন খোকন” শাহরাস্তি উপজেলা ও পৌর বিএনপির বর্ষবরণ উৎসবের ২য় দিনে প্রীতি ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত চিরকুটে ক্ষমা, মৃত্যুতে রহস্য: শাহরাস্তিতে জনতা ব্যাংকে এক আত্মঘাতী ট্র্যাজেডির যত ছায়া গল্প

শাহরাস্তিতে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ নেতার বিএনপির ইফতার মাহফিলে উপস্থিতি নিয়ে তোলপাড়

 শহরাস্তিতে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ নেতা শাহরিয়ার জাহান তনয়ের বিএনপির ইফতার মাহফিলে উপস্থিতির ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া এক ছবিতে দেখা যায়, তিনি উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার এবিএম পলাশের পাশে দাঁড়িয়ে কুশল বিনিময় করছেন। এ ঘটনায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।

স্থানীয় আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, শাহরিয়ার জাহান তনয় ইতোমধ্যে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িত। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় সংগঠনের শৃঙ্খলাবিরোধী কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছিল। দল থেকে সকল সুবিধা নিয়েই তিনি নিজেকে ছাত্রলীগের নেতা দাবি করে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকছেন এবং দলীয় পরিচয়ে চলাফেরা করছেন। এবার বিএনপির ইফতার মাহফিলে তার উপস্থিতি সেই বিতর্ক আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

ঢাকায় আয়োজিত একটি ইফতার মাহফিলে বিএনপি ও ছাত্রদলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ নেতার উপস্থিতি কেবল কাকতালীয় নয়, বরং রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে? একাধিক সূত্র বলছে, শাহরিয়ার জাহান তনয় তার রাজনৈতিক অবস্থান পরিবর্তনের চেষ্টা করছেন এবং বিএনপির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা তৈরি করতে চাইছেন।

স্থানীয় আওয়ামী লীগের এক নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “একজন ছাত্রলীগ নেতা কীভাবে বিএনপির ইফতারে যায়? তার উদ্দেশ্য কী? এটা কি ছাত্রলীগের আদর্শ বহন করে? দলের সুসময়ে এরা সুবিধা গ্রহণের পরও যদি কেউ অন্য দলে গিয়ে ঘুরে বেড়ায়, তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।”

বিএনপির ইফতার মাহফিলে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ নেতার উপস্থিতি নিয়ে তৃণমূল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি’র নেতারা ফুঁসে উঠেছেন। অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতা হওয়া সত্বেও বিএনপির মতো প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কিভাবে ওঠাবসা করেন?

এক ছাত্রলীগ কর্মী বলেন, “ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় এরকম ছাত্র নেতারাই ছাত্রলীগের নাম ভাঙিয়ে চলে, তাহলে সাধারণ কর্মীরা কী শিখবে? দলের জন্য আমরা জীবন দিচ্ছি, আর এসব সুবিধাবাদী নেতারা বিএনপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে আমাদের আদর্শকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।”

বিএনপির পক্ষ থেকে এ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে। উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোঃ সেলিম পাটোয়ারী লিটন বলেন, “আমরা কারও ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে মন্তব্য করব না। তবে কে বা কারা ইফতার মাহফিলে তাকে এনেছে, তা তদন্তের বিষয়।”

এ ঘটনায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির শীর্ষ স্থানীয় নেতারা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে, এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে। তৃণমূল নেতারা ইতোমধ্যে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর পদক্ষেপ না নিলে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা আরও বাড়তে পারে। দলীয় সিদ্ধান্ত কী হয়, তা নিয়ে এখন রাজনৈতিক মহলে তীব্র আলোচনা চলছে।

Facebook Comments Box
Tag :
জনপ্রিয় সংবাদ

“শাহরাস্তিতে ইসলামী আন্দোলনের মজলিসে শূরার অধিবেশন ২০২৫ সম্পন্ন: নতুন নেতৃত্বে যাত্রা শুরু”

শাহরাস্তিতে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ নেতার বিএনপির ইফতার মাহফিলে উপস্থিতি নিয়ে তোলপাড়

Update Time : ০১:৫০:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ মার্চ ২০২৫

 শহরাস্তিতে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ নেতা শাহরিয়ার জাহান তনয়ের বিএনপির ইফতার মাহফিলে উপস্থিতির ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া এক ছবিতে দেখা যায়, তিনি উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার এবিএম পলাশের পাশে দাঁড়িয়ে কুশল বিনিময় করছেন। এ ঘটনায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।

স্থানীয় আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, শাহরিয়ার জাহান তনয় ইতোমধ্যে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িত। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় সংগঠনের শৃঙ্খলাবিরোধী কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছিল। দল থেকে সকল সুবিধা নিয়েই তিনি নিজেকে ছাত্রলীগের নেতা দাবি করে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকছেন এবং দলীয় পরিচয়ে চলাফেরা করছেন। এবার বিএনপির ইফতার মাহফিলে তার উপস্থিতি সেই বিতর্ক আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

ঢাকায় আয়োজিত একটি ইফতার মাহফিলে বিএনপি ও ছাত্রদলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ নেতার উপস্থিতি কেবল কাকতালীয় নয়, বরং রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে? একাধিক সূত্র বলছে, শাহরিয়ার জাহান তনয় তার রাজনৈতিক অবস্থান পরিবর্তনের চেষ্টা করছেন এবং বিএনপির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা তৈরি করতে চাইছেন।

স্থানীয় আওয়ামী লীগের এক নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “একজন ছাত্রলীগ নেতা কীভাবে বিএনপির ইফতারে যায়? তার উদ্দেশ্য কী? এটা কি ছাত্রলীগের আদর্শ বহন করে? দলের সুসময়ে এরা সুবিধা গ্রহণের পরও যদি কেউ অন্য দলে গিয়ে ঘুরে বেড়ায়, তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।”

বিএনপির ইফতার মাহফিলে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ নেতার উপস্থিতি নিয়ে তৃণমূল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি’র নেতারা ফুঁসে উঠেছেন। অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতা হওয়া সত্বেও বিএনপির মতো প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কিভাবে ওঠাবসা করেন?

এক ছাত্রলীগ কর্মী বলেন, “ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় এরকম ছাত্র নেতারাই ছাত্রলীগের নাম ভাঙিয়ে চলে, তাহলে সাধারণ কর্মীরা কী শিখবে? দলের জন্য আমরা জীবন দিচ্ছি, আর এসব সুবিধাবাদী নেতারা বিএনপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে আমাদের আদর্শকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।”

বিএনপির পক্ষ থেকে এ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে। উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোঃ সেলিম পাটোয়ারী লিটন বলেন, “আমরা কারও ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে মন্তব্য করব না। তবে কে বা কারা ইফতার মাহফিলে তাকে এনেছে, তা তদন্তের বিষয়।”

এ ঘটনায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির শীর্ষ স্থানীয় নেতারা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে, এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে। তৃণমূল নেতারা ইতোমধ্যে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর পদক্ষেপ না নিলে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা আরও বাড়তে পারে। দলীয় সিদ্ধান্ত কী হয়, তা নিয়ে এখন রাজনৈতিক মহলে তীব্র আলোচনা চলছে।

Facebook Comments Box