শাহরাস্তি উপজেলায় হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব শ্যামা পূজা ও দীপাবলি উৎসব উপলক্ষে উৎসবমুখর ও ধর্মীয় ভাবগাম্বীর্যপূর্ণ পরিবেশে (৩১ অক্টোবর) বৃহস্পতিবার কালীবাড়ি মন্দিরের পাশেই কালীবাড়ির মাঠে ঐতিহ্যবাহী গ্রামীন মেলা শুরু হলো।
মেলার ঐতিহ্য নিয়ে পুরানো দিনের ইতিহাস ঘেঁটে জানা যায়, আজ থেকে প্রায় ৮ শ’ বছর পূর্বে কালীবাড়ি মন্দিরটি স্থাপিত হয়। বাংলা সন হিসেবে আনুমানিক ৬০৯ অব্দ। মন্দিরটিতে বিভিন্ন সময়ের হরেক রকমের পূজা খুবই জাঁকজমকপূর্ণভাবে সম্পাদন করা হয়। তবে প্রতি বছর কার্তিক মাসে কালীপূজা হয়, পূজা উপলক্ষে কালীবাড়ির মাঠে মেলা বসে। দেশ-বিদেশ থেকে আসে অসংখ্য পুণ্যার্থী আসেন এখানে, পাশাপাশি মনের বাসনা পূরণের জন্যে প্রার্থনা করেন। কালীগাছের চতুর্দিকে ঘুরে ঘরে ভক্তরা সংগীত পরিবেশন করেন। ঢাকের বাদ্যে মুখরিত হয় চারদিক। ভক্তরা সারারাত ধরে নাচে-গানে আনন্দে মাতোয়ারা হন। এ সময় মানত করে ভক্তরা পাঠা বলি দেন।
মন্দির থেকে ১০০ গজ দূরেই বিশাল মাঠে আয়োজিত হয় এই মেলা। মেলা উপলক্ষে বিভিন্ন ধরনের দোকানের পশরা সাজিয়ে বসিয়েছেন আশ-পাশের ও দূর-দুরান্ত থেকে আগত ব্যবসায়ীরা। ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী হরেক রকমের দোকানে মধ্যে কাপড়, চশমা, মিঠাই, আচারের দোকান, গৃহস্থালির জিনিসপত্রের দোকান দেখা যায়। এই মেলা হতেই প্রতি বছর কোটি টাকার উপর কাঠের আসবাবপত্র বিক্রি হয় বলেও ব্যবসায়ীরা জানান।
মেলার ব্যবসায়ীরা বলেন, প্রতি বছর এই মেলায় আশায় থাকি আমরা। মেলাতে প্রচুর লোক সমাগম হয় বলে ভালোই বিক্রি হয়। এতে করে আমরাও লাভবান হই৷ নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভালো বলে এখানে ব্যবসা করেও আমরা শান্তি পাই৷ এলাকার মানুষগুলোও আন্তরিক। সেজন্য আমরা নিজেরাও তাদের আতিথিয়েতায় মুগ্ধ হই৷
এত সব ঘটনাবহুল ইতিহাস নিয়ে মেহের কালীবাড়ি আজো দাঁড়িয়ে আছে তার আপন ঐতিহ্যে সমুজ্জ্বল হয়ে। পূরণ করেছে জাতি, ধর্ম, গোত্র, ধনী, গরীব, উঁচু, নিচু, ছোট-বড় সকল মানুষের মনস্কামনা। ধর্মীয় ভাবধারা রেখেছে সমুন্নত। সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল নিদর্শন এই কালীবাড়ির মেলা।