ঢাকা , রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম:
শাহরাস্তিতে কালীবাড়ি বাজার ব্যবসায়ী তারেকুল ইসলাম পাটোয়ারীর পিতার মৃত্যুবার্ষিকী পালন শাহরাস্তিতে মসজিদের সামনে থেকে মুসল্লির অটোরিক্সা চুরি শাহরাস্তিতে বাজার পরিদর্শনে পৌর প্রশাসক মোস্তাফিজুর রহমান শাহরাস্তিতে সূচীপাড়া উত্তর ইউনিয়ন বিএনপি’র উদ্যোগে বন্যাদূর্গতদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ পাইকপাড়া দক্ষিণ ইউনিয়ন বিএনপির মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত শাহরাস্তিতে প্রত্যন্ত এলাকায় বন্যাদূর্গতদের মাঝে ছাত্রদলের ত্রাণ বিতরণ অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতির বহু অভিযোগ শাহরাস্তিতে বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ জামায়াতে ইসলামী ক্রীড়া সংগঠক ও প্রথম বিভাগ ক্রিকেটার সাদ্দাম হোসেন মিঠু’র মাধ্যমে উজ্জ্বল হচ্ছে শাহরাস্তির ক্রীড়াঙ্গন শাহরাস্তিতে কৃষকদের মাঝে বিনামূল্য আমন ধানের উফশী জাতের বীজ ও অন্যান্য উপকরণ বিতরণ

প্রতিবিপ্লব ঠেকাতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের করনীয় কি?

ফেসিস্ট শাসকদের সরানোর জন্য এত মানুষ জীবন দেয়নি। তারা জীবন দিয়েছে এমন একটি ব্যবস্থা কায়েমের লক্ষ্যে যাতে রাষ্ট্রক্ষমতাকে ব্যবহার করে আর কোন শাসক এমন ফ্যাসিস্ট ও মাফিয়া জুলুমবাজ হয়ে উঠতে না পারে। এবারের পরিবর্তন যাতে টেকসই হয়।

২০১৪ সাল থেকে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের শত শত নেতাকর্মীকে গুম ক্রসফায়ার খুন জেল জুলুম নির্যাতন করতে করতে বেপরোয়া খুনিরা নির্দলীয় নিরস্র ছাত্রদেরও খুন করা শুরু করলে বন্দুকের সামনে বুক পেতে দিয়ে শহীদ হয় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের 12 তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। তারপর আর জীবন দেওয়ার মানুষের অভাব হয়নি।

গত ১৬ জুলাই থেকে বাংলাদেশের নিরস্ত্র আন্দোলনকারীদের উপর প্রকাশ্য দিবালোকে গুলি করে হত্যা করার মাধ্যমে এ দেশের জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল আওয়ামী লীগ ও তার দোসররা। এই যুদ্ধ মোকাবেলা করে বিজয় অর্জন করতে গিয়ে বাংলাদেশের জনগণ ক্রমেই ঐক্যবদ্ধ হতে হতে জাতীয় ঐক্যের দ্বারপ্রান্তে উপনীত হয়েছে। বাংলাদেশ এই প্রথম একটি সরকার পেয়েছে, যে সরকার ছাত্রদের নেতৃত্বে জনতার অভ্যুত্থানের উপর প্রতিষ্ঠিত এবং যে সরকারে আন্দোলনকারী নেতৃত্বের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ আছে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক দায়িত্ব:
১. জুলাই অভ্যুত্থানে যেসব শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ আহত হয়েছে তাদের উন্নত চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা।
২. বিজয়ের পর থেকেই কতিপয় রাজনৈতিক দলের নামে দেশের বহু জায়গায় সহিংসতা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও দখলবাজি করে গত কয়েকদিনে জনগণের ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি করা হয়েছে ,সরকার দ্রুততম সময়ে রাষ্ট্রের সর্বস্তরের নাগরিকদের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা করবে।
৩. জুলাই অভ্যুত্থান চলাকালীন ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়েছে। এই হত্যাযজ্ঞের পরিকল্পনাকারী নির্দেশদাতা এবং নির্দেশ পালনকারীদের বিচারের জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা উচিত এবং তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
৪. বিগত আমলের বিপুল দুর্নীতি, লুটপাট ও পাচারের আমলনামা প্রকাশ এবং দুর্নীতি লুটপাটের বিচারের ব্যবস্থা এবং প্রাচারকৃত টাকা টাকা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা।
৫. আয়না ঘর স্থায়ীভাবে বন্ধ বন্ধ করে গুম হওয়া ব্যক্তিদের দ্রুত ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করা। এইসব জঘন্য অপরাধের সাথে সংশ্লিষ্টদের শাস্তি নিশ্চিত করা।
৬. জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করা। এছাড়াও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান সহ কোন উপদেষ্টা পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় অংশগ্রহণ করতে না পারে সে বিধান প্রণয়ন করা।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যে দিকগুলো গুরুত্বের সাথে দেখা উচিত:

অন্তর্বর্তী সরকার বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। প্রথমত, সরকারকে আইনশৃঙ্খলার অবনতি মোকাবিলা করতে হবে, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে এবং দেশব্যাপী জনসাধারণের আস্থা পুনঃ স্থাপন করতে হবে। সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

দ্বিতীয়ত, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের ব্যাঘাত ব্যাপক সমস্যার সৃষ্টি করেছে। ক্ষতিগ্রস্তদের (বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ী ও উৎপাদক) সহায়তা দেওয়া, বাজারে প্রয়োজনীয় সামগ্রীর প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা এবং অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের জন্য সরবরাহ চেইন পুনরুদ্ধার করতে কাজ করতে হবে।

তৃতীয়ত, উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকারকে অবশ্যই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে মুদ্রানীতি, রাজস্ব নীতি ও দরকারি অর্থনৈতিক হস্তক্ষেপের মাধ্যমে মূল্যস্ফীতির চাপ নিয়ন্ত্রণ করা।

লেখক: মেহেদী হাসান ভূঁইয়া
বিভাগ: প্রাণিবিদ্যা
সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ,ঢাকা।

Facebook Comments Box
Tag :
জনপ্রিয় সংবাদ

শাহরাস্তিতে কালীবাড়ি বাজার ব্যবসায়ী তারেকুল ইসলাম পাটোয়ারীর পিতার মৃত্যুবার্ষিকী পালন

প্রতিবিপ্লব ঠেকাতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের করনীয় কি?

Update Time : ১১:৪৮:৪৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৪

ফেসিস্ট শাসকদের সরানোর জন্য এত মানুষ জীবন দেয়নি। তারা জীবন দিয়েছে এমন একটি ব্যবস্থা কায়েমের লক্ষ্যে যাতে রাষ্ট্রক্ষমতাকে ব্যবহার করে আর কোন শাসক এমন ফ্যাসিস্ট ও মাফিয়া জুলুমবাজ হয়ে উঠতে না পারে। এবারের পরিবর্তন যাতে টেকসই হয়।

২০১৪ সাল থেকে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের শত শত নেতাকর্মীকে গুম ক্রসফায়ার খুন জেল জুলুম নির্যাতন করতে করতে বেপরোয়া খুনিরা নির্দলীয় নিরস্র ছাত্রদেরও খুন করা শুরু করলে বন্দুকের সামনে বুক পেতে দিয়ে শহীদ হয় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের 12 তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। তারপর আর জীবন দেওয়ার মানুষের অভাব হয়নি।

গত ১৬ জুলাই থেকে বাংলাদেশের নিরস্ত্র আন্দোলনকারীদের উপর প্রকাশ্য দিবালোকে গুলি করে হত্যা করার মাধ্যমে এ দেশের জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল আওয়ামী লীগ ও তার দোসররা। এই যুদ্ধ মোকাবেলা করে বিজয় অর্জন করতে গিয়ে বাংলাদেশের জনগণ ক্রমেই ঐক্যবদ্ধ হতে হতে জাতীয় ঐক্যের দ্বারপ্রান্তে উপনীত হয়েছে। বাংলাদেশ এই প্রথম একটি সরকার পেয়েছে, যে সরকার ছাত্রদের নেতৃত্বে জনতার অভ্যুত্থানের উপর প্রতিষ্ঠিত এবং যে সরকারে আন্দোলনকারী নেতৃত্বের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ আছে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক দায়িত্ব:
১. জুলাই অভ্যুত্থানে যেসব শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ আহত হয়েছে তাদের উন্নত চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা।
২. বিজয়ের পর থেকেই কতিপয় রাজনৈতিক দলের নামে দেশের বহু জায়গায় সহিংসতা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও দখলবাজি করে গত কয়েকদিনে জনগণের ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি করা হয়েছে ,সরকার দ্রুততম সময়ে রাষ্ট্রের সর্বস্তরের নাগরিকদের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা করবে।
৩. জুলাই অভ্যুত্থান চলাকালীন ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়েছে। এই হত্যাযজ্ঞের পরিকল্পনাকারী নির্দেশদাতা এবং নির্দেশ পালনকারীদের বিচারের জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা উচিত এবং তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
৪. বিগত আমলের বিপুল দুর্নীতি, লুটপাট ও পাচারের আমলনামা প্রকাশ এবং দুর্নীতি লুটপাটের বিচারের ব্যবস্থা এবং প্রাচারকৃত টাকা টাকা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা।
৫. আয়না ঘর স্থায়ীভাবে বন্ধ বন্ধ করে গুম হওয়া ব্যক্তিদের দ্রুত ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করা। এইসব জঘন্য অপরাধের সাথে সংশ্লিষ্টদের শাস্তি নিশ্চিত করা।
৬. জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করা। এছাড়াও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান সহ কোন উপদেষ্টা পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় অংশগ্রহণ করতে না পারে সে বিধান প্রণয়ন করা।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যে দিকগুলো গুরুত্বের সাথে দেখা উচিত:

অন্তর্বর্তী সরকার বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। প্রথমত, সরকারকে আইনশৃঙ্খলার অবনতি মোকাবিলা করতে হবে, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে এবং দেশব্যাপী জনসাধারণের আস্থা পুনঃ স্থাপন করতে হবে। সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

দ্বিতীয়ত, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের ব্যাঘাত ব্যাপক সমস্যার সৃষ্টি করেছে। ক্ষতিগ্রস্তদের (বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ী ও উৎপাদক) সহায়তা দেওয়া, বাজারে প্রয়োজনীয় সামগ্রীর প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা এবং অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের জন্য সরবরাহ চেইন পুনরুদ্ধার করতে কাজ করতে হবে।

তৃতীয়ত, উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকারকে অবশ্যই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে মুদ্রানীতি, রাজস্ব নীতি ও দরকারি অর্থনৈতিক হস্তক্ষেপের মাধ্যমে মূল্যস্ফীতির চাপ নিয়ন্ত্রণ করা।

লেখক: মেহেদী হাসান ভূঁইয়া
বিভাগ: প্রাণিবিদ্যা
সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ,ঢাকা।

Facebook Comments Box