চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়্যারম্যান, ভাইস চেয়্যারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়্যারম্যান পদে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত সর্বমোট ১১ জন প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। শেষ পর্যন্ত এই নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে তিনজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে চারজন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে চারজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১০টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে শাহরাস্তি উপজেলা। আগামী ২১ মে উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হবে।
আসন্ন এই নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিশিষ্ট শিল্পপতি ও সমাজসেবক ইঞ্জি. মোহাম্মদ মুকবুল হোসেন পাটওয়ারী, শাহরাস্তি উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. কামরুজ্জামান মিন্টু, তরুণ শিল্প উদ্যোক্তা মো. ওমর ফারুক রুমি মনোনয়নপত্র দাখিল করেন।
একই সঙ্গে ভাইস চেয়ারম্যান পদে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান তোফায়েল আহমেদ ইরানসহ আওয়ামীলীগ নেতা মো. ওমর ফারুক, সাবেক ছাত্রলীগের সভাপতি ইমদাদুল হক মিলন ও মো. ইব্রাহীম খলিল এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান কামরুন্নাহার কাজলসহ নাজমুন নাহার, হনুফা আক্তার, হাছিনা আক্তার মনোনয়নপত্র দাখিল করেন।
উল্লেখ্য, শাহরাস্তি উপজেলা পরিষদের সদ্য সাবেক চেয়্যারম্যান নাসরীন জাহান শেফালী এই নির্বাচনে ব্যক্তিগত কারণে দাঁড়াবেন না বলে আগেই নিশ্চিত করেছিলেন, তাই তিনি মনোনয়নপত্র ক্রয় করেন নি। তাছাড়া শাহরাস্তি উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক আইন বিষয়ক সম্পাদক মোঃ ইলিয়াস মিন্টু মনোনয়ন জমা দেয়ার তারিখের পূর্বে হাক-ডাক দিলেও অজানা কারণে তিনিও আর মনোনয়ন ক্রয় করেন নি।
আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা–কর্মীরা জানান, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চাঁদপুর-৫ (হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি) আসনে নৌকার প্রার্থী ছিলেন মেজর (অব) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম। এই আসনে আওয়ামী লীগের আরেক নেতা সফিকুল আলম ফিরোজ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। শাহরাস্তি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক চেয়্যারম্যান মো. কামরুজ্জামান মিন্টু স্বতন্ত্র প্রার্থী সফিকুল আলম ফিরোজের পক্ষে নির্বাচন করেছিলেন।
অন্যদিকে উপজেলার বিশিষ্ট শিল্পপতি ও সমাজসেবক ইঞ্জি. মোহাম্মদ মুকবুল হোসেন পাটওয়ারী এবং তরুণ শিল্প উদ্যোক্তা মো. ওমর ফারুক রুমি আওয়ামী লীগের বর্তমান সংসদ সদস্য মেজর (অব) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তমের অনুসারী।
শাহরাস্তি উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সোফিয়া সুলতানা জানান, আগামী ২ মে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে। ২১ মে মঙ্গলবার সকাল ৮ টা হতে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ইভিএম-এর মাধ্যমে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
বিএনপি’র একাধিক নেতা বলেন, ‘সারা দেশেই দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে যেসব নেতা-কর্মী প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে। আমরা দলীয় সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়ে উপজেলায় কোন বিএনপি বা আমাদের সমর্থিত প্রার্থী নির্বাচনে দাঁড়ায় নি।’
জামায়াতের একজন প্রার্থীর ব্যানার ও পোষ্টার মনোনয়ন পত্র কিনার পূর্বে চারিদিকে দেখা গেলেও দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তিনি মনোনয়নপত্র ক্রয় করেন নি। তাছাড়া জাতীয় পার্টি বা অন্যান্য কোন দলের প্রার্থী আসন্ন শাহরাস্তি উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে মনোনয়নপত্র ক্রয় করে নাই।
সকল প্রার্থী আওয়ামী লীগের হওয়ায় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিজেরাই নিজেদের প্রতিপক্ষ হিসেবে ভোটের মাঠে অবস্থান করবেন বলে জানিয়েছেন সুশীল সমাজ ও সচেতন মহল। বিএনপি, জামায়াত ও অন্যান্য দলের কেউ যেহেতু আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দাঁড়ায় নি, সেক্ষেত্রে এসব দলের নেতাকর্মীরা ভোট কেন্দ্রে যাবেন না জানিয়েছেন নেতৃবৃন্দ।