মোঃ হাসানুজ্জামানঃ
শাহরাস্তি সরকারী বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয় ২০০১ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের এক মহতী উদ্যোগে অকাল মৃতু বরণ করা সহপাঠীর পরিবারের হাতে সহায়তা উপহার হিসেবে ২ লক্ষ ৮১ হাজার টাকার চেক প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া মৃত মাহবুবের সহায়তা তহবিলে অংশ গ্রহন করেন নিজমেহার মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ২০০১ সালের পরীক্ষার্থীরা। এসময় মাহবুবের ব্যাংক ঋণ বাবতে আরও ৪৭ হাজার ৫শত টাকা পরিশোধ
করেন তারা।
২০ এপ্রিল শনিবার সকাল ১০ টায় উপজেলার রায়শ্রী দক্ষিন ইউনিয়নের গ্রামখিলা মুন্সী বাড়িতে নিহতের স্ত্রী জান্নাতুল নাইমের হাতে চেক ও ঋণ পরিশোধসহ সর্বমোট ৩ লক্ষ ২৮ হাজার ৫ শত টাকা প্রদান করা হয়।
চেক প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, ২০০১ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের পক্ষে আবদুল কাদের পাটোয়ারী রাসেল, আবদুল হাই রাজন, শাহ্ সম্রাট আখলাকুর রহমান ও নিজমেহার মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০০১ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী বন্ধুদের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন মোঃ ফজলুল করিম। এছাড়া মৃত মাহবুবের মা, শ্বাশুড়ি ও শ্যালক উপস্থিত ছিলেন।
জানা যায়, ২০০১ সালে শাহরাস্তি সরকারী বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করেছিলেন। কৃতকার্যদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন গ্রামখিলা মুন্সী বাড়ির আবদুল মালেকের পুত্র মোঃ মাহবুব আলম। তিনি শিক্ষা জীবন শেষ করে নারায়ণগঞ্জে একটি বাইং হাউজে কর্মরত অবস্থায় হৃদ যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মাত্র ৩৮ বছর বয়সে ২০২৪ সালের ১৮ মার্চ সোমবার মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তিনি এক স্ত্রী, জাকারিয়া ও জারিফ নামে দুই পুত্র সন্তান, পিতা-মাতা এবং এক ভাইসহ আত্মীয় স্বজন, বন্ধুবান্ধব, অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে যান।
এবিষয়ে মৃত মাহবুবের পিতা আবদুল মালেক বলেন, যেই সন্তান বাবাকে দুনিয়াতে রেখে পরপারে চলে যায় ওই সন্তানের পিতা কতটা ভালো থাকতে পারে। আমি আমার বড় পুত্র মাহবুবের অকাল মৃত্যুতে গভীর শোকাহত। মাহবুবের রেখে যাওয়া দুই পুত্র সন্তানের জিম্বা দারিত্ব গ্রহন করে তিনি আরও বলেন, আমি জীবিত থাকা অবস্থায় আমার নাতিদের একটা সুব্যবস্থা করে যাবো। মাহবুবের সন্তানদের যোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে গড়ে তুলতে আপ্রাণ চেষ্টা করবো। মাহবুবের স্ত্রী জান্নাতকে আমার কন্যার আদলে আগলে রাখবেন বলে আশ্বাস প্রদান করেন।
মাহবুবের স্ত্রী জান্নাতুল নাইম বলেন, প্রায় নয় বছরের সংসার জীবনে স্বামী, শ্বশুর, শ্বাশুড়ি আর সন্তানদের নিয়ে বড়ই সুখে ছিলাম। বিধাতার দেয়া আকর্ষিক এক ঝরে স্বামীকে হারিয়ে আজ বিপাকে পুরো সংসার। তবুও আমি ও আমার সন্তানেরা ভালো আছে। আজ আমার এই চরম মূহুর্তে পিতার মত শ্বশুর আর মাতার মত শ্বাশুড়ি আমার পাশে রয়েছে। যাদের সাহস আর সহযোগিতায় অসহায় দুই পুত্র সন্তানকে নিয়ে অনাগত আগামীর দিকে এগিয়ে যাবেন বলে তিনি বিশ্বাস করেন।