এক সময়ে হাসপাতালের অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা-আবর্জনাময় পরিবেশ ছিল। চিকিৎসক-নার্সদের অবহেলা আর নিরাপত্তাহীনতা ও প্রয়োজনীয় ওষুধ না থাকার কারণে বেসরকারিভাবে চিকিৎসাসেবা নিতে হতো শ্রীপুরের মানুষ। আর এখন মানুষের মুখেই শোনা যায় সেবার প্রশংসা। বলছিলাম গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স’র কথা। বর্তমানে এ হাসপাতালে এসেছে অনেক পরিবর্তন। বাড়ছে সেবার মান। হয়রানি আর ভোগান্তির পরিবর্তে এখন রোগীদের মুখেই শোনা যায় হাসপাতালের সেবা কার্যক্রমের প্রশংসা।
শ্রীপুর উপজেলার লাখ লাখ মানুষের চিকিৎসার একমাত্র ভরসাস্থল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। গাজীপুর-৩ আসনের সাংসদ সদস্য ও প্রতিমন্ত্রী রুমানা আলী’র প্রচেষ্টায় হাসপাতালের চিত্র পাল্টে গেছে, হয়েছে অনেক পরিবর্তন,বাড়ছে সেবার মান। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ প্রয়ণ ভূষণ দাসের তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে ২ লাখ ৭ হাজার রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। অন্তর্বিভাগে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন ৮ হাজার ৯০০ এবং জরুরী বিভাগে ২৫ হাজার ৮০০ জন। বহির্বিভাগে সেবা নিয়েছেন ৯৪ হাজার ৭২১ জন।
অন্তর্বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছেন ৭ হাজার ৭৪৮ এবং জরুরী বিভাগে ১৪ হাজার ৭২৫ জন। বর্তমানে হাসপাতালে বেড়েছে স্বাভাবিক প্রসবের সংখ্যাও। সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রায় ৫ একর জমির ওপর স্থাপিত। হাসপাতালে প্রবেশ করতেই চোখে পড়ে জরুরী বিভাগ। সুন্দর বিশ্রামাগার।
বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার মূল্য তালিকা টানানো রয়েছে দেয়ালে। ভিতরের চারপাশে রোপন করা হয়েছে বিভিন্ন ধরনের ফুলের গাছ। হাসপাতাল চত্বর যেন একটা পার্ক। রয়েছে শতশত ফুল ও ফলের গাছ। এ হাসপাতালে রয়েছে গাইনি কনসালট্যান্ট। স্বাভাবিক প্রসব বাড়াতে গর্ভবতী নারীদের নিয়ে নিয়মিত সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
মাসে ৭০ থেকে ৮০ টি স্বাভাবিক প্রসব হচ্ছে হাসপাতালে। পরিচ্ছন্ন রাখতে বিভিন্ন স্থানে ডাস্টবিন স্থাপন করা হয়েছে। যা আগে ছিল না। শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এর সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে ইসিজি, আল্ট্রাসনোগ্রাম, ডেন্টাল ইউনিট, স্বাভাবিক প্রসব, সির্জার, অপারেশন, প্যাথলজি, ফার্মেসি, করোনা টেস্ট ও করোনার টিকা, ডেঙ্গু পরীক্ষা, গর্ভবতী মা ও শিশুর জন্য এএনসি কর্নার, ইপিআই বা টিকাদান কর্মসূচি চালু রয়েছে। নন কমিউনিকেবল ডিজিজের জন্য রয়েছে আলাদা এনসিডিসি কর্নার। রয়েছে গর্ভবতী মায়েদের জন্য এনসি কর্নার ও পিএনসি কর্নার।
শিশুদের জন্য রয়েছে আইএমসিআই কর্নার। যেখানে মা ও শিশুদের পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার ব্যাপারে সচেতন করা হয়।
চালু রয়েছে ব্রেস্ট ফিডিং ব্যবস্থা এবং ডে কেয়ার সেন্টার। ভায়া সেন্টারের মাধ্যমে ৩০ বছর বা তার উপরের বয়সের মহিলাদের জরায়ু ক্যান্সার প্রতিরোধে স্বাস্থ্য সচেতনতা ও স্কিনিং টেস্ট করা হয়।
কিশোর কৈশোর বান্ধব সেবা কেন্দ্র, ডেন্টাল বিভাগ, নাক, কান, গলা, মেডিসিন শিশু, অর্থোপেডিক, নিয়মিত চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। এছাড়াও কমিউনিটি ভিশন সেন্টার রোগীদের জন্য। রয়েছে শহীদ মিনার ও শিশুদের খেলাধুলার সুব্যবস্থা। শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এর এমন পরিবর্তন আসায় গাজীপুর ৩ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী রুমানা আলীকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানালেন জনসাধারণেরা।
Facebook Comments Box