শাহরাস্তিতে রাতের আঁধারে মসজিদের ১৭ টি পিলারে ভাংচুর করেছে দূর্বত্তরা। মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে এ খবর জানাজানি হতেই ক্ষোভে ফেটে পড়ে মুসুল্লিরা।
উপজেলার সূচীপাড়া উত্তর ইউনিয়নের দৈকামতা মীর বাড়ি জামে মসজিদে সোমবার রাতের যেকোনো সময়ে এ হামলা চালানো হয়েছে বলে ধারণা মুসুল্লি ও স্থানীয় এলাকাবাসীর।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সকালে ফজরের নামাজের পরে মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোঃ এমরান হোসেন শ্রমিকদের মসজিদের নির্মাণ কাজ নিয়ে নির্দেশনা দিতে গেলে পিলারের ভাঙা অংশগুলো তাদের নজরে আসে।
মসজিদের মুসুল্লি মোঃ ইসমাইল হোসেন জানান, তিনি খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে পিলারগুলো ভাঙা দেখতে পান। এসময় তিনি কান্না বিজড়িত কন্ঠে এ ঘটনার বিচার দাবি করেন।
অপর মুসুল্লি মোঃ আবুল বাসার জানান, সকালে লোকমুখে শুনে মসজিদের কাছে এসে দেখি পিলারগুলো ভাঙা।
৩ নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য মোঃ নজরুল ইসলাম জানান, সকালে বাজারে যাওয়ার সময় মসজিদের সেক্রেটারি আমাকে বিষয়টি অবগত করেন। আমি এসে দেখি ১৭ টি পিলারের সবগুলো উপরে ও নিচে ভেঙে ফেলেছে। যারা এ অপরাধের সাথে জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
মসজিদের পাঞ্জেগানা ইমাম মাওঃ মোঃ ইব্রাহিম খলিল জানান, আমি ২ বছর ধরে এখানে নামাজ পড়াই। এ মসজিদটি পুরাতন মডেলের ছিলো। বর্তমানে নতুন করে মসজিদটি আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। ফজরের সময় আমরা খেয়াল করিনি। পরে ভাঙার বিষয়টি নজরে আসে। কোন ধর্মের নয়, সর্বস্তরের জনসাধারণের পক্ষ থেকে এ ঘটনার বিচার দাবি করছি। আজকে তারা মসজিদের উপর আঘাত করেছে কাল আবার অন্য ধর্মের উপর আঘাত করবে। এরা রাষ্ট্রের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর ও ভাইরাস, সর্বস্তরের জনগণ এদের কাছে নিরাপদ নয়। এজন্য এদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
মসজিদ পরিচালনা কমিটির সেক্রেটারি মোঃ এমরান হোসেন জানান, আমি সকালে ইট ভাঙ্গাতে মেশিন আনার পর পাশে কয়েকটি ইট নিতে গিয়ে কিছু সিমেন্টের ভাঙা অংশ পড়ে থাকতে দেখি। তখন শ্রমিক পিলারগুলো ভাঙ্গা দেখতে পেয়ে আমাকে দেখায়। এরপর আমি বিষয়টি সবাইকে জানাই। পিলারগুলো রাতে ভাঙা হয়েছে বলে তিনি ধারণা করেন।
সূচীপাড়া উত্তর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মোঃ লোকমান হোসেন লিটন জানান, আমি সকালে অফিসে এসে ঘটনাটি জানতে পারি। তাৎক্ষণিক আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখে আসি। এটি একটি অমানবিক কাজ। ইসলাম ধর্মের উপর একটা হানিকর ঘটনা ঘটিয়েছে যা অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক। আমি এ ঘটনার তদন্ত পূর্বক সুষ্ঠু বিচার চাই।
শাহরাস্তি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন জানান, খবর পেয়ে আমি নিজে ঘটনাস্থলে গিয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।