শাহরাস্তিতে ঘরের বাইরে মায়ের লাশ তালা মেরে ঢুকতে দেয়নি প্রবাসীর স্ত্রী। নিজ ঘরেই বিতাড়িত হোন বাবা।
এমন হৃদয় বিদারক ঘটনাটি ঘটেছে চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার টামটা উত্তর ইউনিয়নের দৈল বাড়ি গ্রামের প্রধানিয়া বাড়িতে।
স্থানীয়রা জানান, হাবিবুর রহমানের ছোট সন্তান মোঃ মীর হোসেন প্রবাসে অবস্থানরত। গত ১৭ ডিসেম্বর রবিবার তার মা চাঁদপুরে মারা যায়। পরের দিন ১৮ ডিসেম্বর মায়ের লাশ নিয়ে বাড়ি আসলে মীর হোসেনের স্ত্রী আফসানা আক্তার শ্বশুরকে ঘরে প্রবেশ করতে না দিয়ে ঘরের দরজায় তালা ঝুলিয়ে ঘরের ভিতর অবস্থান করে।
বাড়ির আশেপাশের লোকজন ঘটনাটি শুনে এগিয়ে আসলে আফসানা কাহারো কথা না শুনে ঘর বন্ধ রাখে। এতে স্থানীয় লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে।
ঘটনার সংবাদ পেয়ে শাহরাস্তি থানা ওসি তদন্ত মো খায়রুল আলম ( ভারপ্রাপ্ত ওসি) ঘটনাস্থলে আসেন এবং একই সঙ্গে ইউনিয়ন চেযারম্যান মোঃ ফারুক দর্জি উপস্থিত হন। ঘটনা মীমাংসা করবে বলে স্থানীয়দের জানালে তারা শান্ত হন।
হাবিবুর রহমানের ৪ ছেলে। হাবিবুর রহমান একমাত্র টিপ সই ব্যতিত পড়া লেখা জানে না। তার মধ্য ছোট ছেলে মীর হোসেন ২০১৫ সালে বাবা হাবিবুর রহমান হতে ৩ শতক ভূমি দাবি করে। সন্তানের কথা অনুযায়ী বাবা হাবিবুর রহমান ৩ তিন শতক সম্পত্তি হেবা দলিলমূলে দান করেন।
অক্ষর জ্ঞানহীনতার সুযোগে ছোট ছেলে মীর হোসেন বাবার সকল স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি লিখে নেয়। এই ঘটনার কিছু দিন যাওয়ার পর অপর তিন সন্তান ঘটনাটি জানতে পারে। এই ব্যাপারে ছোট সন্তানের বিরুদ্ধে সম্পত্তি নিয়ে জালিয়াতি করার দায়ে বিজ্ঞ আদালতে মামলা করেন। মামলা নিষ্পত্তির জন্য ছোট ছেলে মীর হোসেন বাবার কাছ থেকে ৩ লাখ টাকা নিয়ে পুনরায় বাবাকে ২৩ শতক সম্পত্তি দলিল রেজিষ্ট্রির মাধ্য ফেরত দেয়।
মীর হোসেন দলিল দিলেও বাবা ও মাকে ঘরে স্থান না দিয়ে তাদেরকে বেদম মারধর করে বাড়ি থেকে বাহির করে দেয়। অসহায় বৃদ্ধ বাবা মায়ের উপর এমন নির্যাতনের কথা শুনে অপর সন্তানরা বাবা মাকে চাঁদপুরে নিয়ে আশ্রয় দেয়।
এর মধ্যে গত ১৭ ডিসেম্বর রাত রবিবার মায়ের মৃত্যু হলে ১৮ ডিসেম্বর সোমবার সন্তানরা বাবাকে সহ মায়ের মৃত লাশ নিয়ে বাড়ি আসলে এমন মর্মাহত ঘটনা ঘটে। সন্তানরা প্রতারনার স্বীকার মায়ের লাশ ঘরের বাহিরে রেখে প্রায় ৫ ঘন্টা পর দাফন শেষে অসহায় বাবা হাবিবুর রহমান (৮০) নিয়ে বাড়ি ছেড়ে অজানা স্থানে চলে যায়।