নিজস্ব প্রতিবেদক:
হাজীগঞ্জে স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষনের পর এলাকায় থেকে গাঁ ডাকা দিয়েছে চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী শুকুর আলম। অভিযুক্ত ধর্ষক উপজেলার ৮নং হাটিলা পূর্ব ইউনিয়নের বেলঘর পদুয়া গ্রামের টিনওয়ালা বাড়ির মৃত আ. মান্নানের ছেলে। আর স্কুল শিক্ষার্থী একই এলাকার নোয়া বাড়ির নুরল ইসলাম (ছদ্দনাম) এর মেয়ে। সে বেলঘর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
জানা যায়, গত বুধবার (৮ নভেম্বর ) সকাল ৯ টায় শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ের উদ্দেশ্য নিজ বাড়ি থেকে বের হয়। বিদ্যালয়ের কাছে পৌছলে এলাকায় চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী শুকুর আলম তাকে ফুসলিয়ে কচুয়া উপজেলার একটি পার্কের বিশ্রামাগারে নিয়ে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষন করে। পরে ধর্ষক শুকুর আলম দুপুর ১টায় তার অটোরিকশাতে করে ধর্ষিতা কিশোরীকে বাড়ি পৌছে দেয়। কিশোরী মেয়েটি এলাকায় এসে তার পরিবার ও স্থানীয়দের বিষয়টি অবহিত করে। বিষয়টি ধর্ষক শুকুর আলন টের পেয়ে এলাকায় থেকে লাপাত্তা হয়ে যায়। বর্তমানে সে এলাকার বাহিরে থেকে ধর্ষিতা কিশোরী ও তার পরিবারের লোকদের বিভিন্ন ভাবে হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছে।
ঘটনার দিন বিকেলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ কর্তৃপক্ষ ধর্ষিতা কিশোরীকে আইনী পরামর্শ না দিয়ে বরং বিদ্যালয় থেকে টিসি দিয়ে তাকে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন। পরে কিশোরীর পরিবার ও বিদ্যালয়ের সভাপতির অনুরোধে প্রধান শিক্ষক ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে টিসি দেওয়া থেকে বিরত থাকেন। এরপর প্রধান শিক্ষক শিক্ষার্থী ও তার পরিবারের লোকদের কাছ থেকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীর বিদ্যালয় যাওয়া বন্ধ করে দেন।
ধষণের শিকার ঐ শিক্ষার্থীর চাচা জহির (ছদ্মনাম) বলেন, স্কুলে আমাদেরকে ডেকে নিয়েছে। তারপর কমিটির লোকজন আর ম্যাডামরা বলছে টিসি দিয়ে বের করে দিবে। পরে টিসি দেয় না। মেয়েরে স্কুলে যাইতে নিষেধ করছে। আসার সময় সাদা কাগজে আমাদের স্বাক্ষর রাখছে। মেয়ে এখন স্কুলে যায় না।
স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সালমা বেগম বলেন, মেয়ে ক্লাসে বই রেখে চলে যায়। এই ঘটনায় তার অভিভাবকে ডেকে সাবধান করা হয়েছে। যেহেতু তার সামনে পরীক্ষা। তাই তাকে টিসি দেওয়া হয় না। আপাতত তাকে স্কুলে আসতে নিষেধ করা হয়েছে। সমানে যেহেতু তার পরীক্ষা। সে পরীক্ষার সামনে এসে পরীক্ষা দিবে।
উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শাহজান বলেন, প্রধান শিক্ষক এমন কাজ করতে পারেনা। বিষয়টি জানার পর প্রধান শিক্ষককে ফোন করলে তিনি আমাকে জানিয়েছেন শিক্ষার্থী ও তার পরিবারের লোকদের এমন কোন নির্দেশনা দেননি।
আর বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ফখরুল ইসলাম বলেন, এই মেয়ে এর আগে অনেক ঘটনা ঘটাইছে। আমি তাকে টিসি দিতে বলছি। পরবর্তী সবাই সিদ্ধান্ত নিয়ে টিসি দেই না। স্কুলে আসা বন্ধ করে দিয়েছি। সে স্কুল এসে এই ভাবে বই রেখে চলে যায়। দূর্ঘটনা ঘটলে দায় কে নিবে? তাছাড়া এইভাবে তো স্কুলের মান সম্মান নষ্ট হয়ে যায়।
হাজীগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আব্দুর রশিদ বলেন, বিষয়টি জানার পর স্থানীয় ইউপি সদস্যকে বলেছি মেয়েটি ও তার পরিবারের লোকদের থানা আসার জন্য। কিন্ত তারা এখন পর্যন্ত থানা আসেননি এবং লিখিত অভিযোগ দেননি। তবে অভিযোগ পেলে ধর্ষক শুকুর আলমের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ যে, এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এখনো ধর্ষণের বিষয়ে কোনো মামলা দায়ের করা হয়নি।