ঢাকা , শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৫, ১১ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম:
শাহরাস্তিতে হেল্পিং হ্যান্ডস ইউথ ফাউন্ডেশনের বই বিতরণ প্রকাশ্যে সোহরাওয়ার্দী কলেজ ছাত্র শিবিরের কার্যক্রমে নতুন নেতৃত্বে ঘোষণা ইসলামী ছাত্র আন্দোলন কবি নজরুল কলেজ শাখার নতুন নেতৃত্ব সভাপতি তাজিম সম্পাদক রেজাউল বর্ণিল আয়োজনে সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজে পিঠা উৎসব উদযাপন শহীদ জিয়াউর রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে শাহরাস্তি বিএনপি’র দোয়া মাহফিল শাহরাস্তিতে ছাত্রদল নেতার ওপর সন্ত্রাসী হামলা সাংবাদিক শাহ আলম ভূঁইয়ার পিতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রউফ এর ১২ তম মৃত্যু বার্ষিকী শাহরাস্তিতে খাল থেকে অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার শাহরাস্তি সমাজ ও জনকল্যাণ সংঘের উদ্যোগে শিক্ষা উপকরণ বিতরণের ব্যতিক্রমী আয়োজন শাহরাস্তিতে বদলিজনিত কারনে বিদায়ী সহকারী কমিশনার রেজওয়ানা চৌধুরীর সঙ্গে প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দের মতবিনিময়

কবি নজরুল কলেজে দুই সাংবাদিক কে লাঞ্ছিত করেছেন ছাত্রলীগ কর্মীরা

কবি নজরুল কলেজ প্রতিনিধিঃ

রাজধানীর কবি নজরুল সরকারি কলেজে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় দুই সাংবাদিককে বেধড়ক মারধর করেছেন শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি বেলায়েত হোসেন সাগরের অনুসারীরা। মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) দুপুরে কলেজের অধ্যক্ষের কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, মঙ্গলবার ওই সময়ে ক্যাম্পাস গেটে গোলযোগ দেখে এগিয়ে যান ‘ঢাকা ওয়েভ’র প্রতিনিধি ও কবি নজরুল কলেজ সাংবাদিক সমিতির দপ্তর সম্পাদক শীতাংশু ভৌমিক অংকুর এবং ‘দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস’র প্রতিনিধি ও সাংবাদিক সমিতির কার্যনির্বাহী সদস্য পার্থ সাহা। এ সময় ছাত্রলীগের কর্মীরা এক শিক্ষার্থীকে মারধর করছিলেন। মারধরের ছবি তোলায় অংকুরের ফোন কেড়ে নেন এবং সাংবাদিককে মারধর শুরু করেন ছাত্রলীগের কর্মীরা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতির অনুসারী মেহেদী হাসান পলাশ, শেখ সুমন, ফাহিম তাজ, তানজিদ আহমেদ বাবু, রাতুল হাসান, তামিম মোল্লাসহ প্রায় ১০-১৫ জন ওই দুই সাংবাদিককে মারধর করেন। ভৌমিক চিৎকার করে বলেন, ‘ভাই আমি সাংবাদিক, আমি সাংবাদিক’ তারপরও ছাত্রলীগের কর্মীরা বলেন ‘সাংবাদিক দেখার টাইম নাই’ বলেই মারের পরিমাণ আরো বাড়িয়ে দেয়।

শীতাংশু ভৌমিক অংকুর বলেন, ক্যাম্পাস গেটে জটলা দেখে আমি এবং পার্থ এগিয়ে যাই। গিয়ে দেখি তারা কলেজের এক শিক্ষার্থীকে মারধর করেছে। ছবি তুলতে গেলেই আমার ফোন কেড়ে নেয়। আমি সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাকে কলেজের মূল ফটকের সামনের রাস্তায় ফেলে লাথি মারতে থাকে। পার্থ আমাকে বাঁচানোর চেষ্টা করলে ওর চুল ধরে টেনে নিয়ে মারধর করে। এরপর আমাকে কলেজের মসজিদের সামনে নিয়ে দ্বিতীয় দফায় আবার মারধর করে।

ভুক্তভুগি পার্থ সাহা বলেন, আমরা ছবি তুলতে গেলে ওরা অংকুরকে মারধর শুরু করে। তখন আমি বলি, ‘অংকুর সাংবাদিক সমিতির দপ্তর সম্পাদক, ওকে মারছেন কেন আপনারা?এ কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে আমাকে ওরা চুল ধরে ধাক্কাতে ধাক্কাতে নিয়ে গিয়ে আটকে রাখে এবং শীতাংশুকে মারতে থাকে।

এ বিষয়ে কবি নজরুল কলেজ সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আতিক হাসান শুভ বলেন, বর্তমানে ক্যাম্পাসগুলোতে ছাত্রলীগের কার্যক্রম বরাবরের মতোই প্রশ্নবিদ্ধ। কবি নজরুল কলেজে যে সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে তা এর ব্যতিক্রম নয়। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সাংবাদিক শিতাংশু ভৌমিক অংকুর ও পার্থ সাহার ওপর যারা হামলা করেছে তাদের অতি দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানাচ্ছি।

এ ছাড়া মারধরে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার কথাও জানান তিনি।

কলেজ সাংবাদিক সমিতির সভাপতি যায়েদ হোসেন মিশু বলেন, আমি খবর পেয়েই ক্যাম্পাসে যাই এবং ঘটনাস্থল থেকে শীতাংশু ও পার্থকে নিয়ে ন্যাশনাল মেডিকেলে যাই। পরবর্তীতে ন্যাশনাল হাসপাতালে দুজনকেই চিকিৎসা দেওয়া হয়।

ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মাহমুদ বলেন, দুই সাংবাদিককেই প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু একজনের অবস্থা গুরুতর। তার মাথায় ও তলপেটে আঘাতের কারণে শ্বাস নিতে সমস্যা হওয়ায় তাকে অক্সিজেন দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ইনজেকশনসহ প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র লিখে দেওয়া হয়েছে।

মারধরের বিষয়ে কবি নজরুল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আমেনা বেগম বলেন, আমি ঘটনাটা শুনিনি। আর এ বিষয়ে কোনো অভিযোগও পাইনি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিষয়ে কবি নজরুল কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি বেলায়েত হোসেন সাগর বলেন, সাংবাদিককে মারধরের ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। এ ঘটনায় জড়িত প্রত্যেকের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে ।

Facebook Comments Box
Tag :
জনপ্রিয় সংবাদ

শাহরাস্তিতে হেল্পিং হ্যান্ডস ইউথ ফাউন্ডেশনের বই বিতরণ

কবি নজরুল কলেজে দুই সাংবাদিক কে লাঞ্ছিত করেছেন ছাত্রলীগ কর্মীরা

Update Time : ০৩:১৬:৫২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ অক্টোবর ২০২৩

কবি নজরুল কলেজ প্রতিনিধিঃ

রাজধানীর কবি নজরুল সরকারি কলেজে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় দুই সাংবাদিককে বেধড়ক মারধর করেছেন শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি বেলায়েত হোসেন সাগরের অনুসারীরা। মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) দুপুরে কলেজের অধ্যক্ষের কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, মঙ্গলবার ওই সময়ে ক্যাম্পাস গেটে গোলযোগ দেখে এগিয়ে যান ‘ঢাকা ওয়েভ’র প্রতিনিধি ও কবি নজরুল কলেজ সাংবাদিক সমিতির দপ্তর সম্পাদক শীতাংশু ভৌমিক অংকুর এবং ‘দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস’র প্রতিনিধি ও সাংবাদিক সমিতির কার্যনির্বাহী সদস্য পার্থ সাহা। এ সময় ছাত্রলীগের কর্মীরা এক শিক্ষার্থীকে মারধর করছিলেন। মারধরের ছবি তোলায় অংকুরের ফোন কেড়ে নেন এবং সাংবাদিককে মারধর শুরু করেন ছাত্রলীগের কর্মীরা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতির অনুসারী মেহেদী হাসান পলাশ, শেখ সুমন, ফাহিম তাজ, তানজিদ আহমেদ বাবু, রাতুল হাসান, তামিম মোল্লাসহ প্রায় ১০-১৫ জন ওই দুই সাংবাদিককে মারধর করেন। ভৌমিক চিৎকার করে বলেন, ‘ভাই আমি সাংবাদিক, আমি সাংবাদিক’ তারপরও ছাত্রলীগের কর্মীরা বলেন ‘সাংবাদিক দেখার টাইম নাই’ বলেই মারের পরিমাণ আরো বাড়িয়ে দেয়।

শীতাংশু ভৌমিক অংকুর বলেন, ক্যাম্পাস গেটে জটলা দেখে আমি এবং পার্থ এগিয়ে যাই। গিয়ে দেখি তারা কলেজের এক শিক্ষার্থীকে মারধর করেছে। ছবি তুলতে গেলেই আমার ফোন কেড়ে নেয়। আমি সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাকে কলেজের মূল ফটকের সামনের রাস্তায় ফেলে লাথি মারতে থাকে। পার্থ আমাকে বাঁচানোর চেষ্টা করলে ওর চুল ধরে টেনে নিয়ে মারধর করে। এরপর আমাকে কলেজের মসজিদের সামনে নিয়ে দ্বিতীয় দফায় আবার মারধর করে।

ভুক্তভুগি পার্থ সাহা বলেন, আমরা ছবি তুলতে গেলে ওরা অংকুরকে মারধর শুরু করে। তখন আমি বলি, ‘অংকুর সাংবাদিক সমিতির দপ্তর সম্পাদক, ওকে মারছেন কেন আপনারা?এ কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে আমাকে ওরা চুল ধরে ধাক্কাতে ধাক্কাতে নিয়ে গিয়ে আটকে রাখে এবং শীতাংশুকে মারতে থাকে।

এ বিষয়ে কবি নজরুল কলেজ সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আতিক হাসান শুভ বলেন, বর্তমানে ক্যাম্পাসগুলোতে ছাত্রলীগের কার্যক্রম বরাবরের মতোই প্রশ্নবিদ্ধ। কবি নজরুল কলেজে যে সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে তা এর ব্যতিক্রম নয়। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সাংবাদিক শিতাংশু ভৌমিক অংকুর ও পার্থ সাহার ওপর যারা হামলা করেছে তাদের অতি দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানাচ্ছি।

এ ছাড়া মারধরে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার কথাও জানান তিনি।

কলেজ সাংবাদিক সমিতির সভাপতি যায়েদ হোসেন মিশু বলেন, আমি খবর পেয়েই ক্যাম্পাসে যাই এবং ঘটনাস্থল থেকে শীতাংশু ও পার্থকে নিয়ে ন্যাশনাল মেডিকেলে যাই। পরবর্তীতে ন্যাশনাল হাসপাতালে দুজনকেই চিকিৎসা দেওয়া হয়।

ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মাহমুদ বলেন, দুই সাংবাদিককেই প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু একজনের অবস্থা গুরুতর। তার মাথায় ও তলপেটে আঘাতের কারণে শ্বাস নিতে সমস্যা হওয়ায় তাকে অক্সিজেন দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ইনজেকশনসহ প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র লিখে দেওয়া হয়েছে।

মারধরের বিষয়ে কবি নজরুল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আমেনা বেগম বলেন, আমি ঘটনাটা শুনিনি। আর এ বিষয়ে কোনো অভিযোগও পাইনি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিষয়ে কবি নজরুল কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি বেলায়েত হোসেন সাগর বলেন, সাংবাদিককে মারধরের ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। এ ঘটনায় জড়িত প্রত্যেকের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে ।

Facebook Comments Box