রিয়াজ শাওন:
“কষ্টের দিন শেষ হবে একদিন” এমন বুক ভরা স্বপ্ন গেথেঁ ছিলেন কচুয়ার ছেলে সুজন। কয়েক হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে কষ্টের দিনগুলো মুছে দিয়ে পরিবারের মুখে হাসি ফুটাবে এমন স্বপ্ন দেখিয়েছিন পরিবারকে।
কিন্ত তার সেই স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার করে দিলেন দালাল সুজন। প্রবাসে পাড়ি জমাবেন এমন আশা দালাল সুমনকে ৩ লক্ষ টাকা দেন সুজন। কিন্তু এই টাকা নেওয়ার পর গত এক বছরেও সুজনকে ভিসা দেয়নি দালাল সুমন। উল্টো প্রবাস থেকে মোবাইল ফোনে নানা ভাবে হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন দালাল সুমন মিয়া। তাকে এই টাকা দিয়ে এখন দিনমজুর সুজন পথে পথে ঘুরছেন। দালাল সুমনের পরিবারের কাছে গিয়েও পাত্তা পায়নি অসহায় সুজন।
জানা যায়, দালাল সুমন মিয়ার গ্রামের বাড়ি হাজীগঞ্জ উপজেলার ৮নং হাটিলা পূর্ব ইউনিয়নের বেলঘর। ওই গ্রামের নোয়া বাড়ির সিরাজুল ইসলামের ছেলে। আর দালাল সুমন মিয়ার খপ্পরে পড়া দিন মজুর সুজন মিয়া কচুয়া উপজেলার নলুয়া গ্রামের ইজরা বাড়ির মফিজুল ইসলামের ছেলে।
পুলিশ সুপার বরাবর দেওয়া লিখিত অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত ভিসা দালাল সুমন মিয়ার সাথে মোবাইল ফোনে পরিচয় হয় ক্ষতিগ্রস্ত সুজন মিয়ার। পরিচয় হওয়ার কিছুদিন পরই সুজন মিয়াকে ভালো একটি ভিসা আছে এমন একটি সংবাদ দেন বেলঘর গ্রামের ভিসা দালাল সুমন মিয়া। ভিসার দর দামও চুড়ান্ত করে পেলেন দু’জনেই। স্বাক্ষী রেখে ভিসা দালাল সুমনকে ৩ লক্ষ টাকা দেন সুজন। কিন্ত স্বাক্ষী রেখে টাকা দিয়েও কুল কিনারা পাচ্ছেন না দিনমজুর সুজন। সংসারের গ্লানি টানতে গিয়ে দিন পার হয়ে যায় সুজন মিয়ার। দিন শেষে দালাল সুমনের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নিতে না পারায় ভেঙ্গে পড়ছেন সুজন। ২ মেয়ে আর স্ত্রী নিয়ে তার ৪ জনের সংসার। এরপরও তিনি থেমে নেই। দালাল সুমনের থেকে টাকা ফেরত পেতে পুলিশ সুপারসহ থানা পুলিশের দ্বারস্ত হয়েছেন। একদিকে প্রবাস থেকে দালাল সুমনের হুমকি-ধমকি, আর অন্যদিকে সংসারের গ্লানি টানার চিন্তায় পা চলেনা নলুয়া গ্রামের দিনমজুর সুজন মিয়ার।
সুজন মিয়া বলেন, সংসারের অভাব অনটন দূর করতে প্রবাসে পাড়ি দিতে এলাকার বিভিন্নজন থেকে সুদে টাকা এনে ভিসা দালাল সুমনকে দেই। তাকে টাকা ভিসা দেই দিচ্ছি বলে আমার সাথে টালবাহানা শুরু করে। প্রায় একটি বছর শেষ হলেও টাকা বা ভিসা দেয়নি বেলঘর গ্রামের দালাল সুমন। উল্টো সে আমাকে মোবাইল ফোনে হুমকি দেন, টাকা না দিলে আমি তার কি করতে পারবো।
এই বিষয়ে দালাল সুমনের সাথে তার বিদেশি নাম্বারে কল দিয়ে একাধিক বার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এই বিষয়ে জানতে দালাল সুমন এর বাড়িতে গেলে সংবাদকর্মীদের উপস্থিত টের পেয়ে কৌশলে পালিয়ে যায় তার বাবা সিরাজুল ইসলাম। এরপর তাকে বার বার মুঠোফোনে কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
আর দালাল সুমনের মা সালেহা বেগম সুজনের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার বিষয়টি জানেন না। আমার ছেলে টাকা নিলে টাকা দিয়ে দিবে। আমার ছেলের টাকার কোন অভাব নাই।