চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার কালীবাড়ি বাজারে মোবাইল ব্যাংকিং বিকাশের মাধ্যমে অভিনব কায়দায় প্রতারণা করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে চক্রের মূলহোতা আবরার মাহির ওরফে সিমান্ত ও তার সহযোগী শাহেদ জনগণ কর্তৃক হাতে-নাতে আটক হয়।
বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২ টায় ঘটনাটি কালীবাড়ি বাজারের ব্যবসায়ী হায়দার টেলিকমের স্বত্বাধিকারী হায়দার নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, প্রতারক চক্রের সিমান্ত নামের ছেলেটি দোকানে মোটর সাইকেল থেকে নেমে আমাকে ১০ হাজার টাকা বিকাশ করতে বলে। পাশে শাহেদ নামের ছেলেটি টাকা বাহির করতে করতে পাশের দোকানে সফট ড্রিংকস কিনার নাম করে সটকে পড়লে সীমান্ত নামের প্রতারক আমার দোকান থেকে লোকজন বেশি হওয়ার আস্তে করে সটকে পড়তে চাইলে আমার পাশ্ববর্তী দোকানদার বিষয়টি দেখে তাকে ডাক দেয়৷ সে দৌড় দিলে আমরা সীমান্ত ও শাহেদকে আটক করি।
আটকের পর তাদের কাছে নগদ ক্যাশ নাই বলে তারা মোবাইল ও মোটর-সাইকেল জিম্মা দিয়ে কিছুক্ষণ পর দিবে জানিয়ে সেখান থেকে সরে পড়ে।
বিকেলে সীমান্ত’র মা দেবকরা স্কুলের শিক্ষিকা আমাকে ফোন দিয়ে ছেলের মোবাইল ও মোটরসাইকেল দিতে অনুরোধ করে। রাতে আমার পাওনা ১০ হাজার টাকা তিনি পৌঁছে দিবেন বলে জানান।
রাত ৮ টার দিকে স্থানীয় বাজারের পুরাতন একজন ব্যবসায়ী সীমান্ত ও শাহেদের জিম্মা নিয়ে আমার কাছে টাকা বুঝিয়ে দিয়ে মোটর সাইকেল ও মোবাইল নিয়ে চলে যায়। এই ছেলের সাথে আরও কয়েকজন জড়িত বলেও তিনি জানান।
হায়দার টেলিকমের পাশ্ববর্তী দোকানের কর্মচারী প্রতিবেদককে জানান, ঘটনার সময় আমি ফ্রি থাকায় হায়দারের সাথে কথোপকথনে ব্যস্ত ছিলাম। দোকানে আরও গ্রাহক চলে আসায়, সে সুযোগকে কাজে লাগিয়ে তারা সটকে পড়তে চাইলে আমরা তাদের ২ জনকে ধরে ফেলি। পরে সময় নিয়ে তারা রাতে ১০ হাজার টাকা ফেরতও দেয়।
স্থানীয় ঠাকুরবাজারের কয়েকজন মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে জানান, সীমান্ত সত্যিকারের প্রতারক। সে আমাদের থেকে একই কায়দায় টাকা নিয়ে ফেরত দিতে টাল বাহানা করে। অথচ স্থানীয় ছেলে হিসেবে আমরা তাকে চিনি বিধায় বিকাশ করে দিয়ে বিপদে আছি। আমরাও আমাদের টাকা ফেরত চাই।
স্থানীয় দোকানদাররা জানান, প্রতারক চক্রের ২ জন, প্রতিবার ধরা খেলে স্থানীয়ভাবে মীমাংসা করে পার পেয়ে যায়। তারা স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়া স্বত্বেও এরকম জঘন্য কাজে কিভাবে সম্পৃক্ত হয়, তা নিয়েই আলোচনা হচ্ছে পুরো বাজার জুড়ে।
প্রতারক চক্রের মূলহোতা সীমান্তকে ঘটনার সত্যতা ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে তিনি প্রতিবেদককে দেখে নেয়ার হুমকি প্রদান করে।
এলাকাবাসী ছেলেগুলোর ব্যাপারে অভিযোগ করে বলেন, ছেলেগুলো মাদকাসক্ত বা মাদক বিক্রি সাথে জড়িত বলে আমরা জানি। কিশোর গ্যাংয়ে জড়িত এসব ছেলেরা সমাজের বিষফোঁড়া। তাদেরকে নির্মূল না করতে পারলে সমাজ ধ্বংস হয়ে যাবে বলেও জানান তারা।
প্রতারক সীমান্তের মা ছেলের অপকর্মের বিষয়ে জানান, ছেলে ভুল করতেই পারে। আমরা তাকে শাসন করছি, তবে বিপথে চলে যাওয়ায় আমরা তাকে ফেরাতে পারছি না।