আজ বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের প্রয়ান দিবস। বাংলাদেশের জাতীয় কবি। বাঙালি জাতি আজকের দিনটিকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছে। কবির প্রতি রইল আমার বিনম্র শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।
কাজী নজরুল ইসলাম ছিলেন কবি, সাহিত্যিক, গায়ক, নাটক ও সিনেমার অভিনেতা এবং পরিচালক। বহু সিনেমায় তিনি অভিনয়ের পাশাপাশি সিনেমার পরিচালকএবং সংগীত পরিচালক হিসেবে কাজ করেছেন। আকাশ বাণীতে সংগীত পরিবেশন ও পরিচালনা ছাড়াও কোরআন শিক্ষার অনুষ্ঠান পরিচালনা করেছেন।
তিনি কবিতা, গান, প্রবন্ধ, নাটক, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে দেশি বিদেশি শোষণের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ ও সোচ্চার কন্ঠ ছিলেন। ব্রিটিশ বিরোধী কবিতা “আনন্দময়ীর আগমন ” লেখার জন্য জেল খেটেছেন।উনার পাঁচটি কাব্যগ্রন্থ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। ১৯২৬ সালে পুর্ববঙ্গ থেকে কেন্দ্রীয় আইন সভার উচ্চ পরিষদের সদস্য পদের জন্য নির্বাচন করেন।
তিনি ছিলেন যৌবনের কবি,সাম্যবাদের কবি, প্রেমের কবি,মানবতার কবি,।নবজাগরণের কবি,সুন্দরের কবি, উদ্দীপনার কবি, গানের কবি। তাঁর বিদ্রোহী কবিতা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ কাব্য হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। তাঁর গান ও কবিতা বাংলাদেশের মুক্তি কামী মানুষকে মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রেরণা জুগিয়েছে।
তিনি অসাম্প্রদায়িক ব্যক্তিত্ব ছিলেন অন্নদাশঙ্কর রায় বলেছেন “সবকিছু ভাগ হয়েছে ভাগ হয় নাইকো নজরুল” তাঁর যেমন নিতাই ঘটক, জগৎ ঘটক,প্রতিভা বসু, কানন দেবী ছিলেন তেমনি সুফী জুলফিকার হায়দার, মুজাফফর আহমদ,আলী আকবর খাঁন, কাজী মোতার হোসেন, মিস ফজিলাতুন্নেসা নিত্যদিনের সাহিত্যকর্মের সঙ্গী ছিলেন।
তিনি এক দিকে যেমন লিখেছেন ইসলামিক গান গজল, নাত, হামদ অন্যদিকে লিখেছেন শ্রেষ্ঠ শ্যামা সংগীত, কীর্তন , ভজন।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাথে ছিল তাঁর মধুর ও স্নেহের সম্পর্ক। রবীন্দ্রনাথ তাঁর” বসন্ত গীতি “নাটকটি নজরুলকে উৎসর্গ করেন। কবি উল্লসিত হয়ে লিখেছেন “আজ সৃষ্টি সুখের উল্লাসে” কবিতাটি। পরবর্তীতে নজরুল তার সঞ্চিতা কাব্য সংকলন রবীন্দ্রনাথকে উৎসর্গ করেন।রবীন্দ্রনাথের মৃত্যু দিন শোকাহত নজরুল “রবিহারা ও সালাম অস্ত রবি” কবিতা এবং শোক সংগীত “ঘুমাইতে দাও শ্রান্ত রবি রে “গানটি লিখেন এবং স্বকণ্ঠে কলকাতার বেতার আকাশবাণী থেকে আবৃত্তি করেছেন। এই অসাম্প্রদায়িক মহামানবের প্রয়ান দিবসে জানাই শ্রদ্ধাঞ্জলি ও ভালোবাসা। তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করছি।
লিখাঃ মোস্তাফিজুর রহমান পাটোয়ারী
গবেষক, প্রাবন্ধিক ও কলামিষ্ট