টানা বৃষ্টিপাতের কারণে শাহরাস্তি পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় ভয়াবহ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। শাহরাস্তি পৌরসভার বিভিন্ন এলাকার জনগণ এ বিষয়ে শাহরাস্তি পৌরসভা ও উপজেলা প্রশাসনের কাছে প্রতিকারের আশায় একের পর এক অভিযোগ করে যাচ্ছেন।
পৌর এলাকার বিভিন্ন জায়গায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে জনসাধারণের চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে, অনেকেই হাঁটু পানি দিয়ে যাতায়াত করছে। শাহরাস্তি উপজেলা পরিষদ জামে মসজিদের খতিব মাওলানা মিজানুর রহমান পানি বন্দি হয়ে পড়েছেন। তিনি পৌরসভা সহ বিভিন্ন মহলের শরণাপন্ন হয়েও কোন প্রতিকার না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েন। তিনি জানান, তার বাড়ির চারপাশে অপরিকল্পিত ভাবে জমি ভরাট করার ফলে দুর্ভোগে পড়েছেন।
৮ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মিন্টু চক্রবর্তী টুটুল জলাবদ্ধতার কবল থেকে উদ্ধার হতে উপজেলা প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছেন।
৭ নং ওয়ার্ডের মাহমুদ আলী পাটওয়ারী বাড়ির মোঃ হানিফ জানান, জলাবদ্ধতার কারণে অসহায় হয়ে পড়েছেন তারা।
শাহরাস্তি পৌরসভার কতৃপক্ষের যথাযথ পদক্ষেপের অভাবে খাল দখল ও অপরিকল্পিত ভাবে জমি ভরাটের কারণে পৌর এলাকার বিভিন্ন স্থানে এ জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। এর ফলে মশার উপদ্রব বৃদ্ধি পেয়েছে ও পানি বাহিত রোগের লক্ষণ দেখা দেয়ায় মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে পৌরবাসী। পৌর ভবনের সামনে অবস্থিত খালটি দখল হয়ে যাওয়ায় ও ময়লা আবর্জনার স্তূপে পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়াও পৌর এলাকার ব্যস্ততম ঠাকুর বাজারের পানি নিষ্কাশনের জন্য বহমান খালটির মধ্যে ময়লা আবর্জনার স্তূপে পনি চলাচল স্বাভাবিক না থাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। অতি বৃষ্টিপাত হলেই দুর্ভোগের কবলে পড়তে হয় শাহরাস্তি পৌরবাসীকে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হুমায়ুন রশিদ জানান, প্রতিদিন জলাবদ্ধতা নিয়ে অভিযোগ পাচ্ছি পৌর এলাকার জলাবদ্ধতা নিয়ে আমাদের তেমন কিছু করার নেই। তারপরও বিষয়টি এমপি স্যারকে জানানো হয়েছে স্যার গুরুত্ব সহকারে বিষয়টি দেখছেন।
এদিকে জনগনের অভিযোগের কারণে ৮ আগষ্ট বিকেলে পৌর সভার সামনের খাল অবমুক্ত করার অভিযান পরিচালনা করে উপজেলা প্রশাসন। এসময় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রেজওয়ানা চৌধুরী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
জলাবদ্ধতা নিরসনে শাহরাস্তি পৌর মেয়র হাজী আঃ লতিফ জানান, পানি নিষ্কাশনের জন্য পৌর এলাকায় প্রায় দেড় শ’ কিলোমিটার ড্রেন নির্মাণ প্রয়োজন। আপাতত ড্রেন নির্মাণ কোন প্রকল্প নেই। এ জন্য তিনি দায়ী করেন যারা অপরিকল্পিত ভাবে জমি ভরাট করেছেন। তিনি জানান, পৌর সভার নিজস্ব কোন পুলিশ নেই যার কারণে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। তিনি জনগনকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান।
৮ নং ওয়ার্ডের পৌর কাউন্সিলর মোঃ মিজানুর রহমান জানান, তার ওয়ার্ডের বিভিন্ন জায়গায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। পানি নিষ্কাশনের জন্য খাল অবমুক্ত করা হচ্ছে। শাহরাস্তি পৌরবাসী জলাবদ্ধতার কবল থেকে মুক্তি পেতে দীর্ঘস্থায়ী ও পরিকল্পিত নগর ব্যবস্থাপনার দিকে মনোযোগ দিতে পৌর কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এখনই পরিকল্পিত, সুনির্দিষ্ট যথযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে আগামীতে বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়তে পারে শাহরাস্তি পৌরবাসী।