রুহুল আমিন খাঁন স্বপন, ফরিদগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
গুরুত্বপূর্ণ কাজে যাওয়ার সময়ে নিজের কর্তব্য মনে করে তিনি থামলেন, তারপর দ্রুত পড়ে পানিতে পড়া থাকা বৃদ্ধাকে লোকজনের সহায়তায় উঠিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে দ্রুত হাসপাতালে পাঠিয়ে প্রাণ বাঁচালেন তিনি। শুধু তাই নয় কিছুক্ষণ পর পর মুঠোফোনে তার অবস্থা, পরিচয় নিশ্চিত না হওয়ায় সমাজসেবা কর্মকর্তাকে ফোনের মাধ্যমে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিতে অনুরোধ সবকিছুই করেছেন তিনি । তিনি আর কেউ নন, ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আ: মান্নান।
ঘটনাটি মঙ্গলবার (২০ জুন) বিকালের গুপ্টি পশ্চিম ইউনিয়নের খাজুরিয়া এলাকার ঘটনা।
জানা গেছে, সনাতন ধর্মালম্বীদের রথ যাত্রা উৎসব মঙ্গলবার (২০ জুন) উপজেলার ৪টি স্থানে অনুষ্ঠিত হয়। ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আ: মান্নান গুপ্টি পূর্ব ইউনিয়নের গুপ্টি বাজারের সন্নিকটস্থ সেনবাড়ির রথযাত্রা উৎসবের আইনশৃংখলা পরিস্থিতি দেখভালের জন্য নিজেই গাড়ী যোগে ছুটে চলেন। এরই মধ্যে তার কাছে সংবাদ আসে, গুপ্টি পশ্চিম ইউনিয়নের খাজুরিয়া বাজারের একটি পুকুরের পানিতে একজন বৃদ্ধাকে পড়ে থাকতে দেখা গেছে। তিনি দ্রুত আশপাশের লোকজনকে বৃদ্ধাকে উদ্ধারের নির্দেশ দেন । কয়েক মিনিটের মধ্যে তিনিও ঘটনাস্থলে পৌঁছান।
এসময় লোকজন মাত্র বৃদ্ধাকে পানি থেকে কিছুটা উপরে তুলে নিয়ে আসে। এসময় ওসি আ: মান্নানের কথামতো ওই বৃদ্ধাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিলে তার পেট থেকে কিছু পানি বের হয়ে যায়। ফলে তার জীবিত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে সাথে দিয়ে তিনি দ্রুত গাড়ী যোগে বৃদ্ধাকে ফরিদগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠিয়ে দেন।
বৃদ্ধার কোন পরিচয় না পাওয়ায় ওসি নিজের দায়িত্ববোধ থেকে কিছুক্ষণ পর পর হাসপাতালে থাকা পুলিশ কর্মকর্তাকে চিকিৎসা বিষয়ে বিভিন্ন খোঁজ খবর নেন। শুধু তাই নয়, অজ্ঞাত অসুস্থ এ মানুষটির পরিবারের খোঁজখবর চেষ্টা চালাচ্ছেন তিনি। ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার ও বিভিন্ন কৌশলে খোঁজখবর নিচ্ছেন তিনি।
বৃদ্ধা এ মানুষটির চিকিৎসা সরঞ্জাম ও খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থাও করেছেন মানবিক এই ওসি। একই সাথে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করে পরিচয় নিশ্চিত হওয়া না পর্যন্ত তাকে সহায়তা করার অনুরোধ করেন।
এদিকে পুলিশের এই কর্মকর্তার এমন মানবিক আচরণে সাধারণ জগগণের কাছে ইতোমধ্যে প্রশংসায় পঞ্চমুখ।
মানুষের এমন প্রশংসার বিষয়ে নিজের অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে গিয়ে ওসি মো. আব্দুল মান্নান বলেন, আমাদের দায়িত্বই হচ্ছে মানুষের সেবা করা। আইনি সেবা ছাড়াও যখন কোন অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারি, তখন নিজেকে ভাগ্যবান মনে হয়। তিনি আরো বলেন, আমার মনে হয়েছে, বৃদ্ধা মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। তাই তাঁর পরিচয় পাওয়া যায়নি। তাই তাকে সেবা ও সহযোগিতা করা আমার কর্তব্য।