বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ সাঈদুর জামান বাপ্পি। জন্ম ইলিশের শহর চাঁদপুরের শাহরাস্তিতে। চার ভাইয়ের মধ্যে দ্বিতীয় বাপ্পির পড়াশোনার হাতেখড়ি হয় উপলতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
মাধ্যমিকে ছিলেন মেহার উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র। স্কুলজীবন থেকেই তিনি ছিলেন সাংগঠনিক নেতৃত্বগুণসম্পন্ন। তৃতীয় শ্রেণি থেকেই কাব স্কাউটের সাথে যুক্ত ছিলেন। শাহারাস্তি উপজেলায় বিভিন্ন জাতীয় দিবসে অনুষ্ঠিত কুচকাওয়াজ এবং শরীরচর্চা প্রদর্শনীতে কয়েকবার প্রথম স্থান অধিকার করার নেপথ্যে দলনেতা ছিলেন তিনি। ৬ষ্ঠ শ্রেণি থেকে বিতর্কের সাথে যুক্ত ছিলেন তিনি। চাঁদপুর কন্ঠ পাঞ্জেরী বিতর্ক উৎসব ছাড়াও উপজেলা, জেলা এবং বিভাগীয় পর্যায়ে বিতর্কে অর্জন ছিলো অসংখ্য। বিভিন্ন জাতীয় দিবসে স্কাউটিংয়ের কার্যক্রমের মাধ্যমে অসংখ্য পুরষ্কার এনে দিয়েছে বিদ্যালয়কে।
উচ্চ মাধ্যমিক ছিলেন হাজীগঞ্জ মডেল সরকারি কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র। প্রথম এবং দ্বিতীয় বর্ষে টানা দুইবার আন্ত:বিভাগ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন দলের বিতার্কিক ছিলেন তিনি। এছাড়াও জেলা পর্যায়ে কুইজ প্রতিযোগিতা, বিজ্ঞান উৎসব এবং একক অভিনয়ে অসংখ্য অর্জনের খেতাব। গান গেয়েও পেয়েছেন ভূয়সী প্রশংসা এবং অসংখ্য পুরষ্কার।
প্রগতিশীল চর্চায় ছিলেন বরাবরই সচেষ্ট। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে অনেকটা অংশই ব্যয় করেন বিতর্ক, রোভার স্কাউট, বন্ধুসভা, টিআইবিসহ নানাবিধ সামাজিক-সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে। বর্তমানে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম বিতর্ক সংগঠন বেগম রোকেয়া ইউনিভার্সিটি ডিবেট অ্যাসোসিয়েশন (ব্রুডা) এর সভাপতি, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় রোভার স্কাউট গ্রুপের সভাপতি এবং সিনিয়র রোভারমেট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়াও প্রথম আলো বন্ধুসভা রংপুর এর সাধারণ সম্পাদক এবং ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ – রংপুর সনাক এর ইয়েস সহ দলনেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। চাঁদপুর জেলা ছাত্রকল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।
তার অর্জনের ঝুলি অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছে তাকে। মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে জাতীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতায় রানার আপ হয়ে শিক্ষামন্ত্রীর হাত থেকে পুরষ্কার গ্রহণ করেন। এছাড়াও বিতর্কে রয়েছে অসংখ্য বিজয়ী হওয়ার খেতাব। বিতার্কিক ছাড়াও বিচারক হিসেবেও দেখা যায় তাকে বিভিন্ন বিতর্ক প্রতিযোগিতায়। এছাড়াও রোভার স্কাউটে অনেক জাতীয় ক্যাম্পে অংশগ্রহণ করেন। স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে সেবা প্রদান করেন। বন্ধুসভার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সঞ্চালনায় দেখা যায়। তার অসাধারণ নেতৃত্বের স্বীকৃতি হিসেবে সবগুলো সংগঠনের সর্বোচ্চ পদে আসীন হয়েছেন।
চাঁদপুরের ছেলে রংপুরে এসে আলোর দ্যুতি ছড়াচ্ছে তার মেধা এবং মননশীলতার জায়গায় পরিস্ফুটন করে।
সাঈদুর জামান বাপ্পি বলেন, ব্যক্তিকে তৈরি করে সংগঠন। ভিন্ন সংগঠনে সমবেত হয় ভিন্ন ভাবনা ও কর্মের মানুষ। বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগ ও সেখানে কাজের মধ্য দিয়ে প্রকৃতপক্ষে আমি মানুষকে অধিকতর জানার সুযোগ পেয়েছি। এই জানাই সমৃদ্ধ করেছে আমার চিন্তাজগৎকে, গড়ে তুলেছে এই ক্ষুদ্র আমাকে।