অস্তিত্ব
জেবুন্নেছা মুনিয়া
আমি রয়ে যেতে চাই
এই হাওয়ায় এই জলে,
শেষ হয়ে যাওয়া বৃষ্টির পরে
কেঁপে ওঠা ভেজা বাতাসে,
প্রথম ফোটা কদমের পেলবতায়।
আমি না থেকেও থেকে যেতে চাই
তোমাদের অনুভবে।
সকালের প্রথম রোদ শিশুটির গাল ছুঁয়ে পিছলে গড়িয়ে গেলে-
আমি তার হাসির শব্দে রয়ে যেতে চাই,
কিশোরীর লুটিয়ে পড়া উচ্ছ্বাস
আর কিশোরের অকারন গাম্ভীর্যের মাঝে লুকিয়ে থাকা
আনন্দের উপলক্ষটুকুর সাথে রয়ে যেতে চাই।
ঘুমভাঙা প্রথম চায়ের কাপের আরামদায়ক চুমুকের সাথে আমি মিশে যেতে চাই,
রোজকার আটপৌরে শাড়ির ভাঁজে কিংবা কুঁচকে যাওয়া পাঞ্জাবীর সুতোর ফাঁকে আমি রয়ে যেতে চাই।
আমাকে খুঁজে নিও
তোমার সকল চেনা কাজের ভিড়ে,
ভেঙে যাওয়া চুড়ির বিষাদে,হারিয়ে ফেলা জামার বোতামে।
বারান্দায় অতি যত্নে লতিয়ে ওঠা অপরাজিতার
নীল ফুলের নীরব উৎসবে
আমি রয়ে যেতে চাই।
আমি বারবার জানাতে চাই আমি ছিলাম
তোমাদের সাথে, তোমাদের কাছে..
আমি ছিলাম,আমি আছি।
আমার সকল অনুভব মিশে আছে তোমাদের চেনা দেয়ালের
রংচটা অবয়বে ।
আমি রয়ে গেছি ঘাসে,
রয়ে গেছি অনামী ফুলের ভিড়ে
অদেখায় আছি, অচেনায় আছি,
উথাল পাথাল জ্যােৎস্নায় তোমার নিকানো উঠোন ভেসে গেলে
আমাকে খুঁজো..
আমি আছি বকুল তলার অপার্থিব জমাট অন্ধকারে,
ঝরে পড়া শুকনো ফুলের গন্ধে;
আমি রয়ে গেছি তোমার বুকচেরা দীর্ঘশ্বাসে,
যাপিত জীবনের পরতে পরতে আমি রয়ে গেছি।
আমি রয়ে যেতে চাই
বাতাসের মতো অনুভব হয়ে,
আমি থেকে যেতে চাই
দেখা না দেখায়..
স্মরনে বিস্মরনে..
ভালোবাসা না বাসায়…