সফল উদ্যোক্তা ও মানবিক মানুষ মোহাম্মদ মোশারফ হোসনের ৪৪ তম জন্মদিন।
মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন ১০ এপ্রিল ১৯৭৯ সালে চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার রায়শ্রী উত্তর ইউনিয়নের খামপাড় গ্রামে এক মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম গ্রহন করেন। তাঁর পিতা মরহুম মোহাম্মদ অলি উল্যা ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রনালয়ের অধীন খনিজ ও কয়লা অধিদপ্তরের সিনিয়র পরিদর্শক। মা আনোয়ারা বেগম একজন গৃহিনী। তাদের ৪ ছেলে ৩ মেয়ের মধ্যে মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন পঞ্চম। ভাই-বোন সকলেই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া-লেখা শেষ করে আজ সমাজে প্রতিষ্ঠিত।
শাহরাস্তি উপজেলার রায়শ্রী উত্তর ইউনিয়নস্থ বিজয়পুর উচ্চ বিদ্যালয় হতে তিনি এসএসসি এবং চাঁদপুর সরকারি কলেজ হতে কৃতিত্বের সাথে এইচএসসি পাশ করেন এই মেধাবী মানুষটি।জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে চাঁদপুর সরকারি কলেজে হিসাব বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হয়ে কৃতিত্বের সাথে ২০০০ সালে অনার্স সম্পন্ন করেন তিনি।
লেখাপড়ার বাকি অংশ শেষ করতে নিজের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় শাহ সিমেন্টে একাউন্টস অফিসার পদে যোগদান করেন। দিনে চাকরি আর রাত্রে অধ্যয়ন করার জন্য নৈশকালীন মাস্টার্সে ভর্তি হন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে হিসাব বিজ্ঞান বিভাগে। ২০০১ সালে কৃতিত্বের সাথে মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জন করেন তিনি। শাহ সিমেন্টে সাড়ে তিন বছর কাজ করা শেষে তিনি পাটওয়ারী গ্রুপে একাউন্টস ম্যানেজার হিসাবে যোগদান করেন। সেখানেও সাড়ে তিন বছরের মতো চাকুরী করেন। পরবর্তীতে রপ্তানিমূখী প্রতিষ্ঠান আনন্দ গ্রুপে সহকারি মহা-ব্যবস্থাপক (একাউন্টস এন্ড ফিন্যান্স) হিসাবে যোগদান করেন। অতঃপর তিনি দুই বছর দুই মাসের মাথায় ২০১১ সালের ১ মার্চ রপ্তানিমূখী প্রতিষ্ঠান মিশোয়ার গ্রুপের সিএফও (চীফ ফিন্যান্স অফিসার) পদে যোগদান করেন। বর্তমানে তিনি আনন্দ গ্রুপে সিএফও(চীফ ফিন্যান্স অফিসার) হিসাবে কাজ করছেন। তাছাড়া তিনি অতি সম্প্রতি সিলভার লাইন গ্রুপে খন্ডকালীন অর্থনৈতিক উপদেষ্টা হিসাবে যোগদান করেছেন। বর্তমানে তিনি নিজেই ব্যবসা প্রতিষ্ঠান শুরু করেছেন। এছাড়াও নিজ এলাকায় গ্রামীণ জনপদের মানুষের আমিষের ঘাটতি মিটাতে এগ্রোবেজ শিল্প স্থাপন করে সূধী জনের ইতিমধ্যে নজর কেড়েছেন।
মোঃ মোশারফ একজন সফল উদ্যোক্তাও বটে। ইতিমধ্যে জনসাধারণকে স্বল্প মূল্যে স্বাস্থসেবা প্রদানের উদ্দেশ্যে কয়েকজন বন্ধু মিলে ঢাকার মিটফোর্ডে ‘মেডিলাইফ স্পেশালাইজড হসপিটাল লিমিটেড’ নামের একটি হাসপাতাল স্থাপন করেছেন। তিনি বর্তমানে নিজ এলাকার উনকিলা বহুমুখি উচ্চ বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির বিদ্যুৎসায়ী সদস্য। তাঁর প্রচেষ্টায় ইতিমধ্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের বহু শিক্ষিত বেকার ছেলে-মেয়ের বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরির ব্যবস্থা হয়েছে। পাশাপাশি আর্থিকভাবে অনেককে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন নিভৃতে।
যারা সামান্য দানে নিজেকে প্রচারে ব্যস্ত রাখেন, সেদিক থেকে নিজেকে আড়াল করেই সমাজের অসহায় মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। অথচ এই মানুষটির নিবেদন কিংবা প্রচেষ্টার কথা কেউ জানতো না, জানার চেষ্টাও করেন নি কখনো। নিজ এলাকার বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসার উন্নয়নে তিনি গুরুত্বপূর্ন অবদান রেখে চলেছেন।শাহরাস্তিতে বসবাসরত অনেক গরীব ঘরের সন্তান তার অবদানে শিক্ষিত হয়েছেন এবং হচ্ছেন। এটাই বা কম কিসের?
করোনাকালীন প্রথমদিকে নিজের একান্ত উদ্যোগে স্থানীয় সামাজিক সংগঠনের মাধ্যমে হাজারো মানুষের ঘরে ঘরে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দিয়েছেন।আত্মপ্রচারণা বিমুখ এই মানুষটি প্রতি বছর রমজানে বিভিন্ন মাদ্রাসার এতিম বাচ্চাদের ইফতারের দায়িত্ব নিয়ে থাকেন এবং তা সূচারুভাবে পালন করে আসছেন। কোন প্রতিকূলতা তাকে কখনো দমাতে পারে নি।
তাছাড়া হাজারো বেকার তরুণের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে তিনি বাঁচিয়েছেন হাজারো পরিবারের জীবন। তার স্বীয় কর্মগুণে তিনি মানুষের মাঝে বেঁচে থাকাবেন চিরকাল।
৪৪ তম জন্মদিনে এই মানবদরদী মানবিক মানুষের জন্য দোয়া থাকলো। তিনি বেঁচে থাকলে সমাজে আলো ছড়াবে এবং হাজার তরুণ খোঁজে পাবে তাদের স্বপ্নের ঠিকানা।