আমরা সাংবাদিক, সংবাদকর্মী, রিপোর্টার, আবার কারো কারো কাছে আমরা সাংঘাতিক! মাঝে মাঝে আমরাই মানুষের ভালোবাসা পেয়ে সিক্ত হই আবার কারো কারো কাছে আমরা আবার ঘৃনার পাত্রে পরিণত হই। আমাদের যেমন অভিনন্দন পেতে দেরি হয়না তেমনি আমাদেরকে….।
দয়া করে একটু ভেবে দেখুন শাহরাস্তিতে সব মিলিয়ে ২০/ ২৫ জন সাংবাদিক রয়েছেন। এদের মধ্যে মাঠ পর্যায়ে নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন মাত্র ৮ থেকে ১০ জন। এদের মধ্যে আবার সমালোচনার ঝড় তুলেন ২/৩ জন। আমার ২৬ বছরের এ পেশায় কখনোই একসাথে ১০/ ১২ হাজার টাকা পাওয়ার সুযোগ হয়নি। দীর্ঘ দিন কাজ করার সুবাধে শাহরাস্তি প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমানে সভাপতির দায়িত্ব পালন করছি এমন কেউ কি এসে বলতে পারেন কোন অনুষ্ঠানে দাওয়াত দেওয়ার পর সকল সাংবাদিকদের এক সাথে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা দিয়েছেন। দুঃখের সাথে বলতে হয়, অনেক স্বনামধন্য ব্যাক্তিবর্গ অনুষ্ঠান শেষে পকেটে সাংবাদিকদের পরিশ্রমের অর্থটুকু থাকে না। বেশি দূরে নয় গত একমাসের মধ্যে এমন তিনটি অনুষ্ঠানের টাকা না নিয়েই সাংবাদিকগন চলে আসেন। সাংবাদিক ভাইদের উদারতা কেউ দেখে না। কারণ তারা কাউকে খাটো করার জন্য এ তথ্য জনে জনে গিয়ে বলে বেড়ায় না। কেউ কেউ রয়েছেন সাংবাদিকদের পকেটে দু-একশ টাকা দিয়েই মহান হয়ে যান। দয়া করে আপনার চারপাশে চোখ বুলিয়ে দেখুন এমন অনেকেই রয়েছেন অল্পদিনেই লাখ পতি থেকে কোটিপতি বনে গেছেন। দয়াকরে একটু চিন্তা করুন তার আয়ের উৎস কি? তাদের বিরুদ্ধে কেউ কখনো মুখ খুলতে দেখা যায় না। আমরা সংবাদ প্রকাশ করতে গেলে আশপাশের কেউ সঠিক তথ্য দিয়ে এগিয়ে আসেন না। যত দোষ সাংবাদিকদের। আমি গত কিছুদিন আগে প্রয়াত ৬ সাংবাদিকদের কবর জিয়ারত করতে গিয়ে অবাক হয়ে যাই প্রয়াত সাংবাদিক আঃ রশিদ ভাইয়ের বসত ঘরটি ভেঙে পড়ছে। মীর বিল্লাল ভাইয়ের সংসারের বেহাল দশা, জাকির হোসাইন ভাইয়ের পরিবার দিশেহারা, রেদওয়ান মোগল ভাইয়ের পরিবার অভাবের তাড়নায় ছিন্নভিন্ন। সাংবাদিক ভাইগন যদি এতোটাই অর্থ হাতিয়ে নিয়ে থাকেন ও দুর্নীতির সাথে জড়িত থাকতেন তাহলে তাদের অর্থ গুলো কি কবরে নিয়ে গিয়েছেন।
এইতো গেলো প্রয়াত সাংবাদিক ভাইদের কথা যারা এখনো মাঠ পর্যায়ে নিরলশ ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন তাদের দিকে একটু নজর দেন। দেখুন তো কোন সাংবাদিক ভাই দুর্নীতি করে কোটিপতি বনে গিয়েছেন? আমি এইটুকু বুকে হাত দিয়ে বলতে পারি শাহরাস্তিতে এমন অনেক সাংবাদিক ভাই রয়েছেন তাদের সংসারের সদস্যদের হাসিমাখা মুখ খানি দেখার সৌভাগ্য তাদের ভাগ্যে জোটে না। তারপর জীবন যুদ্ধে তাঁরা যেকোন তথ্য সংগ্রহে ঝাঁপিয়ে পড়ছেন সবার আগে।
আপনাদের সেবায় যারা সবসময়ই পাশে থাকেন তাদের বিপদে কি কখনো ছুটে গিয়েছেন? প্রয়াত সাংবাদিক জাকির হোসাইন ভাইয়ের কোন চাহিদা ছিল না, কারো প্রতি কখনোই জুলুম করেনি, সদালাপী মিশুক সহজ সরল এই ভাইয়ের মৃত্যুবার্ষিকীর কথাও আমরা ভুলে যাই। জাকির ভাইয়ের জীবন থেকে আমাদের অনেক কিছু শেখার আছে। নিজ পরিবারের সদস্যদের অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দিয়ে সারাজীবন তথ্য সংগ্রহে ছুটে গিয়েছেন। আজ তার পরিবার অসহায় , পাশে কেউ নেই। আমরা শুধু সমালোচনাই করতে শিখেছি কিন্তু নিজের অপরাধ গুলো বুঝার সুযোগ আমাদের কখনোই হয়ে উঠে না।