পবিত্র মাহে রমজান মুমিনদের আত্মগঠন ও প্রশিক্ষণের জন্য এক অনন্য চির বিপ্লবের সেরা মাস।রমজান মাস সিয়াম সাধনা ও তাকওয়ার মাস, কল্যাণ ও বরকতের মাস, রহমত ও মাগফিরাত এবং জাহান্নামের অগ্নি থেকে মুক্তি লাভের মাস। মহান আল্লাহ এ মাসটিকে বহু ফজিলত ও মর্যাদা দিয়ে অভিষিক্ত করেছেন। এ মাসের একটি ফরজ ইবাদাত অন্য মাসের ৭০টি ফরজ ইবাদাতের সমান। রমজান মাস আমাদের জন্য বার্ষিক প্রশিক্ষণের মাস। এ মাসে আছে সাহরি, ইফতার, তারাবিহ, ইতিকাফ, লইলাতুল কদর, ফিতরা ও ঈদুল ফিতর। কুরআন নাজিল হয়েছে এ মাসের লাইলাতুল কদরে, সংঘটিত হয়েছে ইসলামের প্রথম যুদ্ধ বদর ও বিজয় হয়েছে পবিত্র মক্কা।
কাজেই আত্মগঠন ও বিজয়ের মাস রমজান। মাহে রমজান ইসলামের আদর্শকে সর্বস্তরের জনগণের কাছে পৌঁছানোর এক সুবর্ণ সুযোগ। দীর্ঘ ১১টি মাস অতিক্রম করে প্রতি বছর এ পবিত্র মাস মুসলিম উম্মাহর কাছে হাজির হয় অজস্র-অফুরন্ত রহমত ও কল্যাণের বার্তা নিয়ে। মুসলিম মিল্লাতের জন্য রহমতস্বরূপ এ মাসটি আত্মগঠন, নৈতিক উন্নতি, চারিত্রিক দৃঢ়তা, পরিচ্ছন্ন ও সুন্দর সমাজ গঠন এবং সামাজিক সাম্যের নিশ্চয়তা বিধানের এক অনন্য সুযোগ।
মানুষের হেদায়াতের আলোকবর্তিকা হয়ে রমজান মাসেই একমাত্র জীবন বিধান কুরআন নাজিল হয়েছে। আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা সূরা বাকারা ১৮৫ নং আয়াতে বলেন : “রমজান মাস, এতে নাজিল হয়েছে আল-কুরআন, যা মানুষের দিশারি এবং স্পষ্ট নিদর্শন ও সত্যাসত্যের পার্থক্যকারী।”
রোজার উদ্দেশ্য তাকওয়া ভিত্তিক সমাজ গঠন। এ প্রসঙ্গে সুরা বাকারার ১৮৩ নং আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘হে মুমিনরা, তোমাদের জন্য রোজার বিধান দেওয়া হলো, যেমন বিধান তোমাদের পূর্ববর্তীদের দেওয়া হয়েছিল, যাতে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো।’
রোজার মাধ্যমে মানুষের মধ্যে লুকিয়ে থাকা পাশবিকতাকে দমন এবং নৈতিক উৎকর্ষ সাধনের সুন্দর ব্যবস্থা বিদ্যমান। আজকে অশান্ত পৃথিবীর সর্বত্র খুন, রাহাজানি, যুদ্ধ-বিগ্রহ, জুলুম-নির্যাতন, অশ্লীলতা বেহায়াপনায় সব কিছুই মানুষের পশুপ্রবৃত্তির পরিণাম। বিশ্বব্যাপী অস্ত্রের প্রতিযোগিতা, দলিত-মথিত মানবতা, মজলুমের ফরিয়াদে ভারাক্রান্ত আকাশ-বাতাস। পারমাণবিক বোমার তেজস্ক্রিয়তায় বিকলাঙ্গ এবং পঙ্গু মানব সভ্যতা।
অথচ আল্লাহতায়ালা পৃথিবীকে বাসের উপযোগী করে গড়ে তোলার জন্য মানুষকে সৃষ্টি করেছেন। আর রোজার আত্ম সংযমের প্রশিক্ষণই পারে মানুষের সেই পাশবিকতাকে দমন করতে। রোজার পুরস্কার সম্পর্কে আল্লাহ নিজেই বলেছেন, ‘‘রোজা আমার জন্য আর এর পুরস্কার আমি দেবো।”
সুতরাং আল্লাহর পুরষ্কারের প্রত্যাশী মানুষের শান্তিকামনায়, আল্লাহর বিধানের উপর অটল-অবিচল থাকার প্রত্যাশায় আমি মাহে রমজানে দেশবাসীসহ সকল জনগনের সুখ-শান্তি ও কল্যাণ কামনা করি। সেই সাথে সবাইকে মাহে রমজানের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ জানাচ্ছি।
শুভেচ্ছান্তে,
সাংবাদিক মো.শাহ আলম ভূঁইয়া
সভাপতি,শাহরাস্তি মিডিয়া ফোরাম।
পরিচালক,ইন্জিনিয়ার’স কেয়ার এন্ড কনস্ট্রাকশন,
শাহরাস্তি, চাঁদপুর।