চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার চিতোষী পশ্চিম ইউনিয়নের ব্যবসায়ী সামছুল ইসলাম ভুট্টোর উপর স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও তার ছেলের হামলারঘ টনায় এলাকা জুড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
গত ২০ই মার্চ ২০২৩ ইং, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সামছুল ইসলাম ভুট্টোর দেয়া ভিডিওতে স্থানীয় ইউপি সদস্য মোশারফ হোসেন ও তার ছেলে মোঃ ইসমাইল হোসেন ব্যবসায়ীর নিজস্ব দোকান আয়েশা বৈদ্যুতিক স্টোরে আক্রমণ করার বিষয়টি ভাইরাল হয়। ব্যবসায়ীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও মৃত্যুর হুমকি প্রদান করায় স্থানীয় জনগণের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
যে জনপ্রতিনিধি জনগণের নিরাপত্তা দেয়ার জন্য নিয়োজিত থাকার কথা, তারাই স্থানীয় ব্যবসায়ীকে আক্রমণ করে জনগণের নিরাপত্তা নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে বলে স্থানীয় জনগণের অভিমত।
ঘটনার তদন্তে গিয়ে জানা যায়, গত ২০ই মার্চ ২০২৩ ইং সকাল ১১ টায় স্থানীয় ব্যবসায়ী সামছুল ইসলাম ভুট্টো নিজ প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার সময় পথিমধ্যে চিতোষী পশ্চিম ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোশারফ হোসেন ব্যবসায়ীকে অকথ্য বাসায় গালিগালাজ করেন এবং রড দিয়ে আঘাত করেন। পরবর্তীতে স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে বিষয়টি আর অগ্রসর হয় নি।সামছুল ইসলাম ভুট্টো সকাল ১১:৩০ মিনিটে নিজের ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে এসে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, আয়নাতলি শাখা হতে ১৫ লক্ষ টাকার সিসি লোনের টাকা উত্তোলন করে নিয়ে আসেন। যা তিনি তার ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের টেবিলের ক্যাশে রাখেন। ঠিক বেলা ১২ ঘটিকায় স্থানীয় মেম্বার ও তার ছেলে ভুট্টোর উপর আবারও হামলা চালায়। এতে করে তার প্রতিষ্ঠানের বাহিরে ক্ষয়ক্ষতি হলেও তারা ক্যাশে থাকা টাকাগুলো অক্ষত অবস্থাতেই রয়েছিলো।
স্থানীয়দের ভাষ্য মতে, ইউপি সদস্য ও ৪নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি মোশারফ হোসেন ব্যক্তিগত আক্রোশে পর পর ২ বার আয়নাতলী বাজারের ব্যবসায়ী সামছুল ইসলাম ভুট্টোর উপর হামলা করেন এবং অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ব্যবসায়ী সামছুল ইসলাম ভুট্টো বলেন, ৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোশারফ হোসেনের ইন্ধনে হামলার শিকার হন তিনি। তাঁর মালিকানাধীন আয়নাতলী বাজারে আয়েশা বৈদ্যুতিক স্টোর নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্টান রয়েছে। মূলত বৈদ্যুতিক সংযোগের বিষয় নিয়ে স্থানীয় প্রগতি ইলেকট্রিক ওয়ার্কশপের স্বত্ত্বাধিকারী মোঃ ওমর ফারুক রুমনের মিথ্যাচারেই ইউপি সদস্য ভুল বুঝাবুঝিতে আমাকে বার বার আঘাত করেছেন বলে তিনি দাবি করেন। প্রথমবার ইউপি সদস্য একা আমাকে আঘাত করে ক্ষ্রান্ত না হয়ে ২য় বার তার ছেলে মোশারফ হোসেনকে সাথে করে নিয়ে এসে আমাকে প্রাণে মেরে ফেলার এবং আমার প্রতিষ্ঠানটি আগুনে পুড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেন। তারা আমার নিকট চাঁদা দাবি করেন, যা আমি দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় তারা এমন গর্হিত কাজ করেছে। এ ঘটনায় জড়িত ইউপি সদস্য মোশারফ হোসেন ও তাঁর ছেলে ইসমাইল হোসেনের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও তিনি জানান।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য মোশারফ হোসেনকে ফোন দেয়া হলেও তিনি ফোন না ধরায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয় নি।
চিতোষী পশ্চিম ইউনিয়নের চেয়্যারম্যান জোবায়েদ কবির বাহাদুর বলেন, ইউপি সদস্য ঘটনার পরে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার সাথে বিস্তারিত শুনে আমি বলতে পারবো, আসলে ঘটনাটি কি! তবে ব্যবসায়ী ভুট্টো আমাকে বিস্তারিত জানিয়েছে।
শাহরাস্তি মডেল থানার ইনচার্জ মোঃ শহিদ হোসেন জানান, এখনও কোন পক্ষ আইনের আশ্রয় নেয় নি। বিষয়টি তদন্তের মাধ্যমে পদক্ষেপ নেয়া হবে।